‘আব্বা আমিও মরলাম, তোমাগোও মাইরা গেলাম’

মাদারীপুরের যুবক রফিকুল ব‍্যাপারি (২২) দালালের নি;র্যাতনে ইতালিতে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় ইতালির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রফিকুল উপজেলার শ্রীনদী গ্রামের হাবীব ব‍্যাপারির ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় দালাল আলমগীর খানের মাধ্যমে সাড়ে ৯ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালির উদ্দেশে পাড়ি জমান।

লিবিয়ায় পৌঁছনোর পর তাকে মাফিয়াদের হাতে তুলে দেন আলমগীর। সেখানে মুক্তিপণের জন্য চালানো হয় নি;র্যাতন। ছেলেকে বাঁচাতে হাবীব ব‍্যাপারি পরে আলমগীরের হাতে কয়েক দফায় আরো ১০ লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু তার পরও রফিকুলকে লিবিয়া থেকে ইতালিতে নেননি আলমগীর। চলতি মাসের ১৫ তারিখে কুদ্দুস নামের আরেক দালালের মাধ্যমে আরো ১০ লাখ টাকা খরচ করে ছেলেকে ইতালি পাঠান তিনি। কিন্তু ইতালি পৌঁছনোর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন রফিকুল। এ অবস্থায় ইতালির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ খবর বাড়িতে পৌঁছনোর পর নেমে আসে শোকের ছায়া।

হাবীব ব‍্যাপারি বলেন, “অনেক ধার-দেনা করে আমার ছেলেকে ইতালির উদ্দেশে আলমগীরের হাত ধরে লিবিয়া পাঠাই। কিন্তু আলমগীর ছেলেকে ইতালি না পাঠিয়ে মাফিয়াদের হাতে তুলে দেয়। ওখানে আমার ছেলের ওপর অমানুষিক নি;র্যাতন করে। ফলে ইতালি পৌঁছনোর পর ছেলে অসুস্থ হয়ে যায়। ইতালির হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর রফিকুল বলেছিল, ‘আব্বা আমিও মরলাম, তোমাগোও মাইরা গেলাম। ’ এরপর আর কোনো কথা হয়নি। ”

এ ঘটনার পর থেকে আলমগীর হোসেন খান গাঢাকা দিয়েছেন। তার বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।

শিরখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। তবে প্রশাসন থেকে এখনো কিছু জানায়নি। ’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’