বাজারে দুধ দিয়ে গোসল করে সারা জীবনের জন্য রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা যুবলীগ নেতার

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ইউনিয়ন যুবলীগের ওয়ার্ড কমিটিতে সভাপতির পদ না পেয়ে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন সানোয়ার হোসেন নামে এক যুবলীগ নেতা। রোববার দুপুরে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাটিয়ার হাট বাজারে তিনি দুধ দিয়ে গোসল করেন। মুহূর্তেই তার গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। সানোয়ার হোসেনের বাড়ি আজগানা ইউনিয়নের তেলিনা গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার ছিল মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সম্মেলন হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তিন জন করে প্রার্থী ছিলেন। ব্যবসায়ী সানোয়ার হোসেন ছিলেন ওয়ার্ড সভাপতি প্রার্থী। পরে উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এতে আজগানা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক করা হয় রোমান সরকারকে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় সুরুজ আলমকে। এছাড়া সেখানে কার্যকরী সদস্য-১ নম্বরে রাখা হয় সানোয়ার হোসেনকে। এতে সানোয়ার হোসেন ক্ষুব্ধ হন। সানোয়ার আজ রোববার দুপুরে খাটিয়ার হাট বাজারে দুধ দিয়ে গোসল করেন।

দুধ দিয়ে গোসলের সময় সানোয়ার বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের এই দুর্নীতিগ্রস্ত দল থেকে অব্যাহতি নিলাম। আওয়ামী লীগের কোনো রাজনীতি বা দলের কোনো কার্যক্রমে, কোনো নেতার সাথে থাকব না। আমি কান ধরে উঠবস করছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির কোনো অনুষ্ঠানে যাব না। কারণ ওরা হল পাপিষ্ঠ। মরার আগে আমি আওয়ামী লীগের হয়ে মরতে চাই না। আমি মুসলমান, কালেমা পড়ে মরতে চাই। এই জালেমদের হাত থেকে বাঁচতে চাই।’ এ সময় সানোয়ার হোসেনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও দুধ দিয়ে ধোয়া হয়।’

উপজেলার আজগানা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ শিকদার বলেন, ‘শনিবার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের কাউন্সিল হয়। এতে দলের ত্যাগী নেতাদের পদ দেওয়া হয়। যারা সুবিধাবাদী, দলের নাম ব্যবহার করে চলে, কমিটিতে তাদের স্থান দেওয়া হয়নি। এতে পদবঞ্চিত হয়ে সানোয়ার হোসেন স্থানীয় বাজারে দুধ দিয়ে গোসল করেছেন। তিনি মূলত ওই বাজারের একজন দোকানদার। তার দুধ দিয়ে গোসলের ভিডিও ফেসবুকের মাধ্যমে দেখেছি। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘যুবলীগের কাউন্সিলে সানোয়ার একাই এসেছে। সারাক্ষণ চুপচাপ থেকে দ্বিতীয় পর্বে প্রার্থিতা ঘোষণা করে সে। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা আলোচনার মাধ্যমে একটি কমিটি দিয়েছে। সেই কমিটিতেহ সানোয়ার একজন সদস্য। কারো উস্কানিতে সে এই কাজ করতে পারে।’

আজগানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদার বলেন, ‘সানোয়ারের বাবা আব্দুর রাজ্জাক একজন ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা। পারিবারিকভাবে সানোয়ার যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। তার বিষয়ে যুবলীগের নেতাদের বিবেচনা করা উচিত ছিলো। ত্যাগী আওয়ামী পরিবারের একজন সন্তানকে এভাবে বঞ্চিত করার জন্য উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম দায়ী।’