জীবনের সমাপ্তি হয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। মৃত্যুর পর মানুষের মরদেহ সমাধিস্থ করা হয়। মানুষের জন্ম যেমন একবার, মৃত্যুও একবারই। সমাধিও মানুষের জীবনে একবার। তবে জীবনে একাধিকবার সমাধি হয়েছে এমন ঘটনা শুনেছেন কখনো? অবাস্তব মনে হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে মার্গরিও ম্যাককল নামে এক ব্যক্তির ক্ষেত্রে।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফেস্ট প্রদেশের লুরগানে অবস্থিত প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র শানকিল সেমেট্রিতে দেখা শিলবে আশ্চর্য এক সমাধিফলকের। সেখানে লেখা রয়েছে ‘মার্গরিও ম্যাককল, লিভড ওয়ান্স, বারিড টোয়াইস’। ৩০০ বছর আগে মারা যাওয়া একজনের সমাধিফলকে কেন এমন লেখা?
১৭০৫ সালের ঘটনা। মহামারি ছড়িয়ে পড়ে আয়ারল্যান্ডে। সে সময় তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হন মার্গরিও মেককেল। তখন চিকিৎসাশাস্ত্র বর্তমানের মতো অতটা উন্নত হয়নি। কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর নড়াচড়া বন্ধ করে দেন মার্গরিও। কোনো সারা শব্দ না থাকায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই মার্গরিওকে সমাধিস্থ করার উদ্যোগ নেয় পরিবার। বাহ্যিকভাবে মার্গরিওকে মৃত দেখালেও সত্য এই যে মার্গরিও ছিলেন জীবিত। যদিও শারীরিকভাবে তিনি সারা দিচ্ছিলেন না।
এই মহামারির সময় আয়ারল্যান্ডে সক্রিয় হয়ে ওঠে কফিন লুটেরা। মানুষের সম্পদ ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিস লুট করতো তারা। অনেকক্ষেত্রে মৃতদেহের সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিস সমাধি খুঁড়ে নিয়ে যেত। মহামারির কারণে তখন অনেক সময় মৃতদেহের সঙ্গে থাকা সোনা, রুপার গহনাসহ সমাধি করতো স্বজনেরা।
মহামারিতে মৃত্যু হওয়ার ফলে মার্গরিওর মৃত্যুর খবর দ্রুত চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। সেই খবর লুটেরাদের কানেও পৌঁছে। তারা সুযোগ খুঁজতে থাকে। এক গভীর রাতে মার্গরিওর কফিন খুলে তারা দেখতে পায় হাতের আঙুলে বিয়ের আংটি। আঙুল থেকে আংটি খুলতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় লুটেরার দল। তখন তারা সিদ্ধান্ত নেয়, মার্গরিওর আঙুল কেটে আংটি বের করার। আর তাতেই বাধে বিপত্তি। হঠাৎ জেগে ওঠে মার্গরিও। আশ্চর্য কাণ্ড! ভয় পেয়ে লুটেরার দল পালিয়ে যায়। আর মার্গরিও হেঁটে সোজা পৌঁছে যায় নিজের বাড়িতে।
এ ঘটনায় সেদিন দরজা খুলে সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হয়েছিলেন মার্গারিওর স্বামী জিম। দরজা খোলার পর স্ত্রীকে দেখে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। এলাকায় হৈ চৈ পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর ঘটনা সবাইকে বুঝিয়ে বলেন মার্গরিও নিজেই। এরপর ধীরে ধীরে পুরো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
অন্যদের মতো স্বাভাবিকভাবেই জীবনযাপন করতে থাকেন মার্গরিও। জন্ম দেন এক সন্তানের। প্রথমবার সমাধিস্থ হওয়ার পর বেঁচে ছিলেন প্রায় দুই দশক। এরপর মারা গেলে তাকে আবারও সমাধিস্থ করা হয়। এই ঘটনাকে অনেকেই বানোয়াট বলেছেন। তবে ঘটনাটি ইতিহাসবিদ জিম কনওয়ের ডায়েরিতে লিপবদ্ধ থাকায় সত্য বলে মেনে নিয়েছেন ইউরোপের অনেক গবেষক।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.