মাত্র ২৫৬ টাকা নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় এসেছিলেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। পকেটে টাকার অঙ্ক কম থাকলেও স্বপ্ন ছিল বিশাল। প্রতিনিয়ত তাই সে স্বপ্ন তাঁকে তাড়িত করেছে। ছুটেছেন, পরিশ্রম করেছেন এবং হয়েছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক, পর্দার ‘মুজিব’। হয়তো এই শুভকে দিয়েই ভারতের বিখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল সমাপ্তি টানলেন তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের, কাজের।
শরতের এক বিকেলে ময়মনসিংহ থেকে এসে ঢাকাই সিনেমার ‘মুজিব’ হয়ে ওঠা শুভর সঙ্গে জমানো হয় আলাপ। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের বাইরের সবুজ ঘাসে সাজানো গোছানো সে আলাপের সাক্ষী রইল স্নিগ্ধ রোদ আর কয়েকজনসহকর্মী। যে আলাপে শুভ বলছিলেন তাঁর মুজিব হয়ে ওঠার গল্প, শুটিংয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের চিত্রায়ণ আর যাপিত জীবনের হালহকিকত! শুভ যখন কথা বলছিলেন তখন ভেসে উঠছিল ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’-এর দৃশ্যপট। কিছুটা হলেও অনুধাবন করা যাচ্ছিল যে, ‘মুজিব’-এর গল্প এতদিন বইয়ে পড়ে আসছি, গল্প শুনে আসছি– পর্দায় সেই মুজিব হয়ে ওঠা সহজ ছিল না।
শুভ বললেন, ‘প্রতিটি মানুষই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করে। সে সংগ্রাম ছোট বা বড় হতে পারে; কিন্তু সংগ্রাম করেই মানুষের চলতে হয়।আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও সংগ্রামের গল্প তো সবারই কমবেশি জানা। সেই জানা ও চেনা গল্পটি পর্দায় ফুটিয়ে তোলা কিন্তু সহজ ছিল না। আর পর্দায় মুজিব হয়ে ওঠাটা কিন্তু আমার জন্য ব্যাপক পরিশ্রমের, কষ্টের, দ্বিধার ছিল। দিনশেষে সেটা পেরেছি। সবার সহযোগিতায় সেটা পেরেছি। আমি আমার সাধ্যমতো ও সাধ্যের চেয়ে বেশি চেষ্টা করেছিলাম ছবিটিতে ঠিকঠাক সব করতে। বাকিটা সবাই দেখার পর জানবেন, বুঝবেন, বলবেন।’
২০২১ সালে শুটিং শুরু হয় ‘মুজিব’ সিনেমাটির। মাঝখানে কেটে গেছে প্রায় দুই বছর। মাঝের এই সময়ে নতুন কোনো সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হননি শুভ। থেকেছেন মুজিব হয়েই। স্বপ্নের প্রজেক্টের শেষটা দেখেই তৃপ্তি নিয়ে অন্য কাজে মনোযোগ দিতে চেয়েছেন। যে মানুষটি দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে দেশের প্রথম অফিসিয়াল বায়োগ্রাফি। তাতে আবার মুখ্য চরিত্র! স্বভাবতই আবেগি হয়ে পড়েন শুভ। জানান, ‘বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয়ের পর আর যদি কোনো অভিনয় নাও করি বাপৃথিবী থেকে চলেও যেতে হয়, তাতেও কোনো আক্ষেপ নেই।’
শুভর কাছে জানতে চাওয়া হয়– সিনেমাটিতে যদি মুজিব না হয়ে অন্য চরিত্রে নির্বাচন হতেন অভিনয় করতেন না? জানালেন, এই সিনেমায় অন্য কোনো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলেও করতেন।তার ভাষ্য, এই সিনেমায় যদি আমাকে পাসিং শটের জন্যও নেওয়া হতো অথবা স্পট বয়ের কাজও দিত, সেটিও আমার জন্য শ্যাম বেনেগাল স্যারের সঙ্গে কাজ করা এবং জাতির পিতাকে নিয়ে একটা সিনেমা হয়েছে– তার অংশ হওয়াটাও অনেক বড় বিষয় হয়ে থাকত।
পর্দায় দেশের বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠা বলতে গেলে নায়ক হিসেবেজীবনের সেরা প্রাপ্তিটাই পেয়ে গেছেন শুভ। এরপরও কি বড় কাজের ক্ষুধা আরও থাকবে? শুভর সাবলীল উত্তর– একজন অভিনেতার অভিনয়ের ক্ষুধা কখনও শেষ হওয়ার নয়, শ্যাম বেনেগাল স্যারদের মতো নির্মাতাদের নির্মাণে কাজ করার ক্ষুধা আরও তাড়িত করবে। কাজের ক্ষুধা আরও বাড়বে, বিস্তৃত হবে।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.