ঝড়টা থামেনি। বরং সেটা আরো প্রবল হয়ে আঘাত হেনেছে বুবলী, তাপস ও ফারজানা মুন্নীর ত্রিভুজ সম্পর্কে। আজ সমুদ্র উপকূলে বিপদসংকেত না থাকলেও তাদের মনের উপকূলে দশ নম্বর মহাবিপৎসংকেত!
এই তো গেল ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ফেসবুকে ফারজানা মুন্নী জানিয়েছিলেন, তার স্বামীর কৌশিক হাসান তাপসের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন বুবলী। তবে কিছু সময় পর পোস্টটি মুছে ফেলেন তিনি। যদিও সেটির স্ক্রিনশট ভাইরাল হতে খুব বেশি সময় নেয়নি। নেটমাধ্যমে এ নিয়ে তুমুল সরগরম পড়ে যায়। তারপর পুনরায় এক পোস্টে তিনি ফেসবুক আইডি হ্যাকের দাবি করেন।
নতুন তথ্য হলো, তাপস-বুবলীর প্রেম নিয়ে দেওয়া পোস্টটি নিজেই দিয়েছিলেন মুন্নী। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়নি। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে কথোপকথনের ফাঁস হওয়া একটি কল-রেকর্ডে নিজের মুখে সেটা বলেছেন তিনি।
ফারজানা মুন্নী বলেন, ‘আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর তাপসের সঙ্গে আমার পরিবারের সবাই বসেছিল। দেখো অপু, আমি তো এখনো সংসার করি। তাপস তো এখনো আমার জামাই (স্বামী)। তারপর যখন আমাকে বলল, এটা দাও (ফেসবুক আইডি হ্যাকের স্ট্যাটাস), তখন আমি এটা দিলাম। আমার কোনো কিছু হ্যাক হয় নাই, শুধু স্ট্যাটাসটা হ্যাক হইছে না, তাই না?’
যে রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন তখন তাপসের সঙ্গে গানবাংলা টেলিভিশনের অফিসে একান্তে সময় কাটাচ্ছিলেন বলে জানালেন মুন্নী। তিনি বলেন, ‘এই তাপসকে আমি চিনতেছি না। তাপস যদি এই মেয়েকে বলে এখন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবা, সে কথামতো দাঁড়িয়ে থাকবে।
তুমি গানবাংলার সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞেস করো; জানতে পারেব ও (বুবলী) কখন ঢোকে কখন বের হয়! তুমি জানো না কী হচ্ছে দুজনের! আমি তোমাকে (অপু বিশ্বাস) বোঝাতে পারব না। না পেরে শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাপসকে ভিডিও কল করে বলছি, বুবলীকে দাও। আমি জানি ওখানে বুবলী আছে। বাথরুমে লুকিয়ে ছিল সে (বুবলী)। সে বাথরুম থেকে বের হলো। তারপর আমি বললাম, বুবলী তোমার লজ্জা লাগে না? তুমি একটা মেয়ে না? তোমার খারাপ লাগে না? ও (বুবলী) আমার কথা শুনে হাসল। ওই হাসিটা দেখে আমি সহ্য করতে পারিনি। তখনই তো আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি।’
অপুর সঙ্গে কথায় কথায় শাকিব খানের প্রসঙ্গ তোলেন মুন্নী। তার দাবি, শাকিবের ওপর প্রতিশোধ নিতে তাপসকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বুবলী। তার কথায়, ‘বুবলী শাকিবকে ধ্বংস করবে। ও (বুবলী) তাকে কনট্রোল করতে পারছে না। রিভেঞ্জ নিতে চায়। এ জন্য তাপসকে ব্যবহার করতেছে। তাপস এটা বুঝতেছে না। তবে ও একদিন বুঝবে।’
বুবলীর মতো খারাপ মেয়ে কখনো দেখেননি বলে জানান মুন্নী। তিনি বলেন, ‘আমি এ রকম খারাপ মানুষ আমার লাইফে দেখি নাই। আমি তো একটা মেয়ে। আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। তোমরা তো ছোট। দুনিয়ায় অনেক কিছু দেখে আজকে এতদূর আসছি। যেকোনো সংসার ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এই মেয়ে এনাফ। এই বিচার কে করবে জানি না। ওর বিচার আল্লাহ করবে।’
বুবলী দিন-রাত গানবাংলা টেলিভিশনের অফিসে পড়ে থাকেন বলে জানালেন মুন্নী। চ্যানেলটির নিজস্ব গাড়িতে তাকে আনা-নেওয়া করা হয়। তার কথায়, ‘বুবলী কোনোদিন বাসায় থাকে না। কোনো সংবাদিক দিয়ে ওর বাসার দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করাও যে, ও কয়টার সময় বের হয় আর কয়টার সময় বাসায় আসে! গানবাংলার গাড়ি কয়টায় ঢোকে, কয়টায় নামিয়ে দিয়ে যায়! আমি হা হয়ে থাকি। কী হচ্ছে এসব! একটা মেয়ে সারাটাক্ষণ তাপসের সঙ্গে থাকে। ওর মতো ভালো মেয়ে নাকি তাপস কখনো দেখেনি।’
তিনি বলেন, ‘বুবলীকে গানবাংলার গাড়ি নিয়ে আসে। আবার দিয়ে আসে। ও তাপসকে বোঝাতে চাচ্ছে, শাকিব আর তার পরিবার তাদের মিলিয়ে দিতে চাচ্ছে, কিন্তু সে সেটা চাচ্ছে না। এখন শুধু তাপসের বুদ্ধিতে চলবে। দেখো না চুপ করে আছে। কোনো স্টেটমেন্ট দিচ্ছে না।’
মুন্নী দাবি করেন, বুবলী এখন তাপসের নির্দেশনায় চলছেন। সম্প্রতি শাকিব-অপুর সন্তান আব্রাম খান জয়ের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটা ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন বুবলী। সেটাও নাকি তার পরামর্শে করেছিলেন।
তাপস-মুন্নীর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টিমএম ফিল্মসের ‘খেলা হবে’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয়ের কথা আছে বুবলীর। সিনেমার লুকের ফটোশুটের ছবি প্রকাশ করেন তিনি। সেই ফটোশুটও নাকি জোর করে করিয়েছেন তাপস।
মুন্নী বলেন, ‘বুবলীর একটা ফটোশুট করেছি। তাপস জোর করে করিয়েছে। ওকে দিয়ে গান গাওয়াচ্ছে। তাকে নিয়ে যে তাপস কী করছে বোঝানো যাবে না!’
বুবলী ছেলেদের কথার জাদুতে মোহিত করে ফেলেন বলে মনে করেন মুন্নী। নিজে নিজে গল্প বানিয়ে তাপসকে আয়ত্তে নিয়ে এসেছে।
দীর্ঘ ফোনালাপটি কে বা কারা প্রকাশ করেছেন, তা জানা যায়নি। তবে কথোপকথনের অপু বিশ্বাসের প্রতিউত্তরগুলো কেটে দেওয়া হয়েছে। শুধু ফারজানা মুন্নীর কণ্ঠ শোনা গেছে। তিনি যে অপুর সঙ্গেই কথা বলছিলেন, সেটার প্রমাণ মিলেছে কথার মাঝখানে তার নাম ধরে ডাকা থেকে।