আব্দুস সামাদ (৫৫) সংসারের ঘানি টানতে দিনমজুরের কাজ করেন। কিন্তু বর্তমানে নিয়মিত কাজ না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। উপায়ান্তর না পেয়ে বাড়তি আয়ের আশায় বিভিন্ন মানুষের বাড়ি ও রাস্তার পাশের সজনে গাছ থেকে সজনে পাতা সংগ্রহ করে ফুটপাতে বসে সেগুলোই বিক্রি করছেন আব্দুস সামাদ।
আব্দুস সামাদ মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পাটাইকোনা গ্রামের মৃত সামছুদ্দিনের ছেলে। ছয় সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম তিনি। তার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এরমধ্যে ২ ছেলে মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে এবং এক ছেলে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা্ করে। এছাড়া সন্তানদের মধ্যে সবার ছোট মেয়ের বয়স মাত্র ৩ বছর।
গত রবিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলকায় ফুটপাতে বসে সজনে পাতা বিক্রির সময় আব্দুস সামাদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মাটি কাটা, অন্যের জমিতে কামলা দেয়া সহ যখন যে কাজ পাই সব করি। কিন্ত সবসময় কাজ থাকেনা। তখন সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। ছেলেদের পড়ালেখার খরচও ঠিকমত দিতে পারিনা। যখন কাজ থাকেনা তখন বিভিন্ন মানুষের বাড়ি ও সড়কের পাশের সজনে গাছ থেকে পাতা পেড়ে সেগুলো মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে এসে ফুটপাতে বসে বিক্রি করি।
তিনি আরও বলেন, সজনে পাতা বেচাকেনা হলে সারা দিনে ১০০-১৫০ টাকা আয় হয়। যা আয় করি তাতে আর সংসার চলেনা।এই টাকা দিয়ে কিভাবে চলব। বাচ্চাদের পড়ালেখা করাবো নাকি সংসার চালাবো? টিসিবর কার্ড পেয়েছি। কিন্ত সেটা আমার ছয় সদস্যের পরিবারের জন্য যথেষ্ট না। সরকার থেকে যদি আরেকটু সহযোগিতা পাইতাম তাহলে আমার খুব উপকার হইতো।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল বলেন, আব্দুস সামাদকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টিসিবির কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা এলে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা থাকবে সব সময়।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, তাকে টিসিবির কার্ড করে দেয়া হয়েছে। ভোটার আইডিতে বয়স কিছুটা কম থাকায় বয়স্কভাতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও তিনি অসহায় হলে এবং উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আবেদন করলে যথাসম্ভব সহযোগিতা করা হবে।