দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউনিয়নের নুলাইবাড়ী গ্রামে ৩৩ শতক জমির ওপরে বিভিন্ন প্রজাতির ড্রাগন চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রতন কুমার কর্মকার। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অনুষদে পড়ুয়া ছেলের পরামর্শে ২০১৭ সালে উদ্বুদ্ধ হয়ে ড্রাগন চাষ শুরু করেন।
ড্রাগনের চারা রোপণের দুই বছর পর থেকেই তিনি ড্রাগনের ফল পেতে শুরু করেন। মূলত মে মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ড্রাগনের ফল পাওয়া যায়। ভাল ফল পাওয়ায় ধীরে ধীরে ড্রাগন বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করছেন এই শিক্ষক।
গোটা ড্রাগন বাগানের ওপরে বৈদ্যুতিক লাইনের তারের মাধ্যমে বাল্ব জ্বালিয়ে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হচ্ছে। ফলে সারা বছর ড্রাগন ফল পাওয়া যায়। এই অফ সিজনে তার ড্রাগন বাগানে থোকায় থোকায় ড্রাগন ফল ঝুলে আছে। লাল, গোলাপী, সাদাসহ পাঁচ প্রজাতির ড্রাগন চাষ হচ্ছে তার ড্রাগন বাগানে। আকারেও বেশ বড়।
কোন রকম কীটনাশক ব্যবহার না করেও স্বাভাবিক সিজনের চেয়েও এখন ড্রাগনের আকার-আকৃতি বড় হচ্ছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর। বাজারেও এই ড্রাগন ফলের চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বাগান থেকেই ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। নিয়মিত পরিচর্যা করায় প্রাকৃতিকভাবেই তিনি এই ড্রাগন আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। এ ড্রাগন বাগানে বেশ কয়েকজন বেকার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
ড্রাগন চাষি রতন কুমার কর্মকার বলেন, ড্রাগন বাগানে আসলেই মনটা ভরে যায়। শপিং ব্যাগ দিয়ে ড্রাগন ফল মুড়িয়ে রেখেছি। যাতে মাছি কিংবা মৌমাছি বসে নষ্ট করতে না পারে। আর এখন দিনের বেলায় সূর্যালোকের স্বল্পতা থাকায় নিয়ম মাফিক বৈদ্যুতিক বাল্বের মাধ্যমে ড্রাগন বাগানে আলোর ব্যবস্থা করেছি। প্রতিদিন আলোর তাপমাত্রা মাপা হয়।
এই সময়ে ড্রাগন উৎপাদনের ক্ষেত্রে তিনি কোন রকমের ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করছেন না বলেও তিনি দাবি করেন এবং এই ফলটিকেও গবেষণাগারে পাঠানোর দাবি করেছেন।
ড্রাগন বাগানের শ্রমিক নরেন চন্দ্র রায় বলেন, নিয়মিত পরিচর্চা আর সঠিক পরিমাণ আলোর ব্যবস্থা করায় আমরা এই ড্রাগন বাগান থেকে এখন ফল পাচ্ছি। তবে প্রাকৃতিক নিয়মেই ড্রাগন চাষ হচ্ছে।
দিনাজপুর সদর কৃষি কর্মকতা আসাদুজ্জামান বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এই ড্রাগন ফলটিকে বারোমাসি হিসেবে পাওয়ার জন্য চাষীদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক কীটনাশক ওষুধ যেন বাগানে প্রয়োগ না করেন সেজন্য তারা দেখাশোনা করা হচ্ছে। জেলার অনেকে ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছে। ড্রাগন একটি বিদেশি ফল। বর্তমানে দেশে আবাদ হওয়ায় পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারছি। অন্যদিকে আমদানি নির্ভরতা কমে যাচ্ছে।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.