আমরা সবাই জানি গরু আমাদের পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম নিরীহ একটি প্রাণী। তাছাড়া এই গরুর দুধ দিয়ে আমরা আমাদের পুষ্টি চাহিদা অনেকাংশই পূরণ করে থাকি। তাই বলা যায় গরু আমাদের পুষ্টি চাহিদা রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম হিংস্র একটি প্রাণী চিতাবাঘ। আর গরু এবং চিতা বাঘের আচার-আচরণ সম্পূর্ণ বিপরীত। তাই স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় যে গরু এবং চিতাবাঘের বন্ধুত্ব কোনদিন কোনভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু বন্ধুরা আমাদের পৃথিবীর রহস্য দিয়ে ঘেরা।
আজকে আমরা দেখতে চলেছি একটি চিতা বাঘ এবং একটি গরুর মধ্যে গড়ে ওঠা আজব সম্পর্কের ব্যাপারে । যারা আসল রহস্য জানলে আপনি হতভম্ব হয়ে যাবেন। আমাদের পৃথিবীর যে সকল ডেইরি পণ্য উৎপাদন করা হয় তার মূল উপাদান হলো গরুর দুধ। গরুর দুধ দিয়ে সিংহভাগ ডেইরি পণ্য উৎপাদন করা হয়। তাছাড়া গরু খুব সাদাসিধে একটি প্রাণী। তাছাড়া এই প্রাণীটি অন্যান্য প্রাণীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পছন্দ করে। কিন্তু চিতাবাঘ খুব হিংস্র প্রাণী। অন্য প্রাণীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের কোন ধার ধারে না। আর এই জাতীয় প্রাণী গুলো যখন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে তখন এরা গরুর মত নিরীহ প্রাণীদের কে ধরে খেয়ে ফেলে। আর এই দুটি প্রাণীর স্বভাবগতভাবেই এমন কিন্তু মাঝেমধ্যে এসব প্রাণী প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের স্ববিরোধী আচরণ করে থাকে।
আর এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল ২০০২ সালে গুজরাটের একটি গ্রামে। ২০০২ সালে হঠাৎ করে একটি চিতা বাঘের আনাগোনা বেড়ে যায় ।এই গ্রামে আসতে থাকে এবং মাঝে মধ্যে গৃহপালিত পশুদের কে আক্রমণ করে খেয়ে ফেলত। তারপর আবার জঙ্গলে পালিয়ে যেত।
প্রথম দিকে এই ঘটনা খুব বেশি একটা ঘটতাে না। কিন্তু ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতেই চিতাবাঘের আনাগোনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। যদিও গুজরাট এলাকার প্রায় সর্বত্রই চিতাবাঘের দেখা পাওয়া যায় কিন্তু হঠাৎ করে এই গ্রামে চিতাবাঘের আনাগোনা খুব বেড়ে যায়। স্থানীয়রা এক বিপাকে পড়ে যায় ।আর তারা বুঝে উঠতে পারছিল না যে এই মুহূর্তে তারা কি করবে।
শেষ পর্যন্ত তারা চিতা বাঘ ধরার জন্য বন বিভাগে অভিযোগ করে। তারা বন বিভাগের কর্মচারীদের খবর দেয়। অবশ্য পরবর্তীতে বন বিভাগের কর্মচারীরা তাকে ধরতে সক্ষম হয়েছিল। তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে জঙ্গলের গভীরে ছেড়ে দিয়ে আসে। এরপর এক মাস গ্রামবাসী খুব ভালোভাবে কাটিয়েছিল। তাদের কোন চিতা বাঘের ভয় ছিল না। কিন্তু একমাস পরে আবার চিতাবাঘটিকে দেখতে
পাওয়া যায়। তবে এটা সেই আগের চিতা বাঘের মতো বিশাল আকৃতির নয়। আগেরবার তাদের গ্রামে চিতা বাঘের হামলা করতে এটা তারই বাচ্চা। গ্রামবাসীরা এবার পশু অধিদপ্তর থেকে কর্মচারীদেরকে আবার খবর দেয়। অধিদপ্তরের কর্মচারীরা আবার সেই গ্রামে আসে। কিন্তু গ্রামবাসীরা এবার তাদের কাছে যে গল্পটা শুনে তারা অবাক হয়ে যায়।
এক ব্যক্তি বলে তার বাড়ি জঙ্গলের কিনারায় তার বেশ কয়েকটি গরুর রয়েছে। কিন্তু সেই চিতাবাঘ তার গাভীর সাথে প্রায়ই দেখা করতে আসত। তারা চিতাবাঘ থেকে কে অনেকবার ধরার চেষ্টা করার পরও ব্যর্থ হয়েছে এবং আরো একটি অবাক করা তথ্য হলো গাভীটিও চিতাবাঘটিকে তার কাছে আসতে দিতো। কোনো রকম বাধা প্রদান করত না। দেখে যেন মনে হত যে তার বাচ্চা।
এটা শুনে বনবিভাগের কর্মচারীরা বিশ্বাস করতে পারেনি। তারা নিজের চোখে দেখার জন্য বেশ কয়েকদিন সে গ্রামে থেকে যায় এবং সৌভাগ্যবশত হঠাৎ একদিন এসব কর্মচারীরা সেটিকে একসঙ্গে দেখতে পায়। ঠিক যেমনটা গ্রামবাসীরা বলেছিল। যখন সেই গ্রামের কাছে আসতো তখন অন্যান্য প্রাণী গুলো দূরে দূরে সরে যেত।
প্রতিদিন একটি রাত ৯ টা থেকে ১১ টার মধ্যে গ্রাভিটি সঙ্গে দেখা করতে আসত এবং সে দেখা করতে এসে কয়েকঘন্টা গ্রাভিটি সাথে এভাবেই বসে থাকতো। দেখে যেন মনে হত যে কোন মা আর বাচ্চা বসে আছে।এবং মাঝেমধ্যে গাভীটি চিতাবাঘ থেকে দুধ পান করাতে। এটা দেখে প্রত্যেকে অবাক হয়ে গিয়েছিল।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.