বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ইতিহাস গড়ল জাপান। শুক্রবার মধ্যরাতে দেশটির চন্দ্রযান স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (স্লিম) চাঁদের শিওলি কার্টার নামের একটি এলাকায় অবতরণ করেছে।
নিজস্ব প্রযুক্তিতে বানানো মনুষ্যবিহীন এই চন্দ্রযান নির্দিষ্ট লক্ষ্যের মধ্যেই অবতরণ করেছে বলে জানিয়েছে জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘জাক্সা’।
এক বিবৃতিতে জাক্সা জানিয়েছে, ২০ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস সময়ের পর শুক্রবার জাপানের স্থানীয় সময় রাত ১২টা ২০ মিনিটে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে ল্যান্ডার। এর মধ্য দিয়ে চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করা পঞ্চম দেশ হিসেবে ইতিহাস গড়ল জাপান। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারত এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরেছে।
স্লিম চাঁদের মাটিতে নামতে পারলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, চন্দ্রযানটির সোলার জেনারেটর কাজ করছে না। কেবল ব্যাটারির শক্তির ওপরই নির্ভর করছে যানটি।
জাক্সার গবেষণা বিভাগের প্রধান হিতোশি কুনিনাকা বলেছেন, ‘এক মাস আগে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে স্লিম। সে সময় সূর্যের অবস্থান যেখানে ছিল— এখন আর সেখানে নেই। ফলে গত বেশ কয়েক দিন ধরেই সৌরশক্তি গ্রহণ করতে পারছে না স্লিমের সোলার প্যানেলগুলো।’
বর্তমানে স্লিমের ব্যাটারিতে যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত রয়েছে, তাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা নভোযানটি সচল থাকবে বলে জানিয়েছেন কুনিনাকা। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ব্যাটারি শক্তি শেষ হওয়া মানেই মিশন শেষ হয়ে যাওয়া নয়।
জাক্সার বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন না যে, অবতরণের সময় সোলার প্যানেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কারণ বাকি নভোযানটি অক্ষত রয়েছে। তারা উল্লেখ করেছেন, সামনের সপ্তাহগুলোতে সূর্যের কোণ পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে সোলার প্যানেলগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে পারে। তখন স্লিমও ফের সচল হবে।
গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর স্লিম এর সফল উৎক্ষেপণ করেছিল জাপান। গত ২৫ ডিসেম্বর চাঁদের কক্ষপথে যানটি প্রবেশের কথা জানিয়েছিল জাক্সা। স্লিমের অবতরণের পর এবার চাঁদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা চলবে। চাঁদের মেরু অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে অক্সিজেন, পানি ও ধাতব পদার্থের অনুসন্ধানই জাপানের এই চন্দ্রাভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য।