ভারতের কেরালায় ৫০০ রুপি দিয়ে একটি লটারি কিনে প্রথম পুরস্কার ২৫ কোটি জিতে নিয়েছেন এক অটোরিকশাচালক। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ‘ওনাম বাম্পার লটারি’ জেতা এই অটোচালকের নাম অনুপ। দোটানা নিয়ে হঠাৎই ড্রয়ের ঠিক আগের দিন শনিবার ‘ভগবতী লটারি এজেন্সির’ একটি টিকিট কিনেন তিনি।
কেরালার শ্রীভরাহমের বাসিন্দা অনুপ সেফ (বাবুর্চি) হিসেবে কাজ করার জন্য মালয়েশিয়া পাড়ি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অভিবাসনের খরচ সামাল দিতে ব্যাংক থেকে তিন লাখ রুপি ঋণ পেতে আবেদন করেছিলেন তিনি। শনিবারই ব্যাংক থেকে অনুমোদনের সুসংবাদ পান তিনি।
ছোট্ট সেই খুশি আকাশ ছুঁয়েছে। এর পরের দিন ২৫ কোটি রুপির লটারি জেতার খবর পান অনুপ।
লটারি কর্তৃপক্ষের খরচ, কর এসব মিটিয়ে অনুপের হাতে আসবে ১৫.৭৫ কোটি রুপি, এমনটি জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
লটারি জেতার পর অনুপ বলেন, ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে শনিবার ব্যাংক থেকে ফোন এসেছিল। আমি বলে দিয়েছি, আমার ঋণের আর প্রয়োজন হবে না। আমি মালয়েশিয়াও যাচ্ছি না। তিনি জানান, গত ২২ বছর ধরে অনেক লটারির টিকিট কিনছেন। এসব লটারিতে শ খানিক রুপি থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার রুপি জিতেছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে উচ্ছ্বসিত অনুপ বলেন, এবার লটারি জেতার কল্পনাও করি নাই। তাই টিভিতে ড্রয়ের ফলও দেখিনি। কিন্তু আমার মোবাইল ফোনে এসএমএস আসে। দেখলাম, আমি ২৫ কোটি রুপির প্রথম পুরস্কার জিতে গেছি।
অনুপ আরও বলেন, আমি তখনও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার স্ত্রীকে এসএমএসটি দেখালাম। তিনি নিশ্চিত করেন যে আমার কেনা লটারির নম্বরটিই প্রথম স্থান জয়ী।
এরপর তিনি তার পরিচিত এক নারী যিনি এই লটারি বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাকে টিকিটের ছবি তুলে পাঠান। ওই নারী তাকে নিশ্চিত করেন যে তার টিকিটই এবার জিতে নিয়েছে প্রথম পুরস্কার।
কীভাবে এত বিশাল অঙ্কের অর্থ তিনি ব্যয় করবেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে অনুপ বলেন, আমার প্রথম ইচ্ছা, পরিবারের জন্যে একটি বাড়ি কিনব এবং সংসার চালাতে যেসব ঋণ আমাকে নিতে হয়েছিল সেগুলো পরিশোধ করে দেব। আমি আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা করব। কিছু দাতব্য ও জনসেবামূলক কাজ করব। এ ছাড়া কেরালায় হোটেল ব্যবসায় কিছু বিনিয়োগ করব, যোগ করেন তিনি।
পুরস্কারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন অনুপের স্ত্রী। তিনি বলেন, আমার স্বামী এর আগেও অনেক লটারির টিকিট কিনেছেন। লটারি জেতার পর অনেক শুভেচ্ছা পেয়েছি। কাকতালীয়ভাবে এর আগের বছর ওনাম বামপার লটারির প্রথম পুরস্কার ১২ কোটি রুপি জেতেন আরেক অটোরিকশাচালক। কোচির বাসিন্দা ওই অটোচালকের নাম জয়পলান। এ বছর দ্বিতীয় স্থান জয়ী পেয়েছেন ৫ কোটি রুপি ও অন্য ১০ জন পেয়েছেন এক কোটি করে।