ভারতীয় বাংলা সিনেমার জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চ্যাটার্জি। ১৯৫১ সালে উত্তম কুমার অভিনীত ‘সহযাত্রী’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। পরের বছরই ‘পাশের বাড়ি’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। মুক্তির পর সিনেমাটি ব্যবসায়ীকভাবে সফল হয়।
সাবিত্রীর ব্যক্তিগত জীবনে বহুবার প্রেম এসেছে। কাকতালীয়ভাবে প্রত্যেকবারই এমন পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, যে আগে থেকেই বিবাহিত। সবকিছু মিলিয়ে কোনোদিন বিয়ে করা হয়নি সাবিত্রীর। এখন তার বয়স ৮৬। গত একমাস ধরে বাড়ি থেকে বের হননি সাবিত্রী। কারণ শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। জ্বর, কাশি, সর্দিতে ভুগেছেন। তবু সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছেন সাবিত্রী। কিন্তু একা একাই এই পূজা করতে হবে তাকে।
আক্ষেপের স্বরে সাবিত্রী টিভি নাইনকে বলেন, ‘আমার কেউ নেই, আমাকে একাই সরস্বতী পূজা করতে হবে। এই গোটা বাড়িটায় ভূতের মতো থাকি। একা একা সরস্বতী পূজা করব। সরস্বতী পূজা মাটিতে বসে করতে হয়। কিন্তু আমি এখন মাটিতে বসতেই পারি না। তাই চেয়ার-টেবিলে বসে সরস্বতীর পূজা করব, তাতে যদি মা তুষ্ট হন। মনে হয় না আগের মতো আর রুষ্ট হয়ে কাউকে কেড়ে নেবেন, কাড়লে আমাকেই কাড়বেন। তাতে আমার দুঃখ নেই। মুক্তি আছে। এতকাল তো আমাকে আশীর্বাদই করেছেন তিনি। আর এ কারণ এই বয়সেও আপনাদের মনোরঞ্জন করে যেতে পারছি।’
সরস্বতী পূজার দিনে সাবিত্রীর বাবা শশধর চ্যাটার্জি মারা যান। পিতৃতুল্য বোন জামাইকেও হারিয়েছেন এই সরস্বতী পূজার দিনে। এ বিষয়ে সাবিত্রী বলেন, ‘আমার বাবা, জামাইবাবু, সবাইকে কেড়ে নিয়েছে মা সরস্বতী। তাই তার প্রতি অভিমানে অনেক বছর পূজা করিনি। গত ৩-৪ বছর ধরে আবারো পূজা করছি।’
সংসার না করা নিয়ে আফসোস নেই সাবিত্রীর। এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘সংসার করিনি তার জন্য কোনো আফসোস নেই। কারণ আমার দিদির ছেলেপুলেদের মানুষ করেছি। এখনো হয়ত তাদের ডাকলেই তারা আসবে, তবে সবারই তো সংসার আছে। এত বড় বাড়িতে তো কথা বলারও সঙ্গী চাই। তাই একা লাগে।’