প্রচলিত সরিষার জাত ছাড়াও নতুন নতুন উচ্চ ফলনশীল সরিষার জাত উদ্ভাবনে গবেষণা চালাচ্ছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় অধিক উৎপাদনশীল বারি ১৪, বিনা-৪, ১৫ ও ১৭ জাতের সরিষার চাষ করছেন ময়মনসিংহের কৃষকেরা। সরিষা একটি তেল জাতীয় ফসল। বর্তমান পরিস্থিতে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ সয়াবিন ছেড়ে সরিষার তেলের দিকে ঝুঁকছে। যারফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় বর্তমানে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে সরিষা।
চলতি মৌসুমে ময়মনসিংহ বিভাগের এক লাখ ৫৬ হাজার কৃষককে এক বিঘা জমির জন্য জনপ্রতি এক কেজি করে সরিষা বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ৪৭ হাজার ৪০০ জন, জামালপুরে ৫৪ হাজার ৬০০ জন, নেত্রকোনায় ২৫ হাজার ২০০ জন এবং শেরপুর জেলায় ২৮ হাজার ৮০০ জন কৃষকের মধ্যে এই প্রণোদনা দেওয়া হয়।
সরিষা চাষিরা জানান, অন্যান্য জাতের সরিষার বেশকিছু পোকার উপদ্রব হত কিন্তু এই জাতের সরিষারএখন পর্যন্ত কোন পোকার আক্রমণ হয়নি। এছাড়াও এই জাতের গাছের আকার অনেক বড়। পাশাপাশি ব্রাঞ্চিং অনেক। এতে করে বাম্পার ফলনই হবে বলে আশা করছি। অন্যান্য জাতের সরিষা বিঘাপ্রতি উৎপাদন হত ৪-৫ মণ কিন্তু এই জাতের সরিষার ফলন প্রায় ১০ থেকে ১৫ মণ । এছাড়াও মণ প্রতি বর্তমান বাজার দর তিন থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত।
কৃষকেরা আরও জানান, রবি মৌসুমের ফসল সরিষা সংগ্রহ করে ওই জমিতেই বোরো চাষ করা যায়। এ কারণে দুই ফসলি জমি থেকে তিন ফসলি কৃষিকাজ করার সম্ভব। ফলে সরিষা চাষে অল্প সময়ে বাড়তি লাববান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. নাসরিন আক্তার বানু জানান, অধিক পুষ্টি ও দ্বিগুণ উৎপাদনশীল এই সরিষার চাষের মাধ্যমে ভোজ্য তেলের আমদানি কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কেননা এই জাতের সরিষা চাষে খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এই জাতের সরিষা চাষ সম্প্রসারণে চাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।