জোয়ারে বিষখালী নদীতে জাল ফেলে স্থানীয় জেলেরা। ভাটিতে তা তোলা হয়। ইলিশের মৌসুমে না হলেও অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার সময় জেলেদের জালে উঠছে বিভিন্ন আকারের তাজা ইলিশ। সেই মাছ নিয়ে বিকেলে বেতাগী পৌর শহরের বাজারে হাজির হন জেলেরা।
সেখানে খুচরা এবং পাইকারি ক্রেতাদের ভিড়। নদীর তাজা ইলিশ কিনতে প্রতিদিনই বাজারে ক্রেতাদের সমাগম হয়। পৌর শহরের সেতুর ঢালে প্রতিদিন বিকেল ও সন্ধ্যায় বসে এই ইলিশের বাজার। সন্ধ্যার পর বাজারটি জমজমাট হয়ে ওঠে। ঈদুল আজহার ছুটিতে এখনো অনেকে এলাকায় রয়েছেন। চাহিদার তুলনায় ইলিশ কম পাওয়ায় বিক্রেতারা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেতাগী পৌর শহরের ‘টাউন ব্রিজ’ নামে পরিচিত সেতুর পশ্চিম পাড়ে বিকেল থেকে নদীর ইলিশ, আইড়, তপসি ও চিংড়ি মাছ নিয়ে জেলেরা আসতে শুরু করেন। তারা বাঁশের ডালায় তাজা ইলিশের পসরা নিয়ে বসেন। দরদাম করে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ কেনেন ক্রেতারা।
পৌর শহরের সরকারি কলেজ এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, ‘সন্ধ্যার পর মাছ কিনতে শহরের ব্রিজের ঢালে আসি। এখানে বিষখালী নদীর তাজা ইলিশ পাওয়া যায়। দেশের অন্যান্য নদীর মাছের তুলনায় বিষখালী নদীর মাছ সুস্বাদু। এলাকায় ঈদুল আজহার লোকজন থাকায় আগের চেয়ে দাম একটু বেশি।’
জানা গেছে, বর্তমানে ইলিশের মৌসুম না হলেও পূর্ণিমা তিথিতে বিষখালী নদীতে পানি বেশি থাকায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন আকারের মাছ। স্থানীয় নদ-নদীতে জেলেদের জালে মাঝারি ও বড় বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে। সাধারণত আষাঢ় থেকে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত বিষখালী নদীতে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়। প্রতিদিনই চার-পাঁচটি বড় (এক কেজি, এক কেজি ২০০ গ্রাম এবং দেড় কেজি ওজনের) ইলিশ পাওয়া যায়। তবে তুলনামূলকভাবে এসব মাছের দাম চড়া।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা এবং কেজিতে দুইটি ইলিশের দাম ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। এ ছাড়া কেজিতে তিনটি ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, জাটকা কেজিতে চার-পাঁচটি ইলিশের দাম ৬০০-৮০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের একটি ইলিশ ৪০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইলিশ মাছ বিক্রেতা সুনিল হাওলাদার ও জাকির হোসেন বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় কম ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তাজা ইলিশের চাহিদা বেশি, এ ছাড়া বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এ জন্য দাম বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা হোটেল ব্যবসায়ী শওকত হোসেন বলেন, ‘দোকানে বিষখালী নদীর তাজা ইলিশের চাহিদা বেশি। তাই পাঁচটি তাজা ইলিশ কিনে নিয়েছি। যার ওজন হয়েছে চার কেজি।’
উপজেলার মৎস্য ব্যবসায়ী এস এম মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বর্তমানে বিষখালী নদীতে মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। মাছের প্রজননের সময় সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালন করায় এ বছর এই বিষখালী নদীতে বেশি মাছ ধরা পড়বে। সারা বছরই এ নদীতে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার তিথিতে কমবেশি ইলিশ ধরা পড়ছে।’