উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী কলার হাট। সপ্তাহে দুই দিন বসে এই কলার হাট। প্রতি হাটে বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার কলা। এ অঞ্চলের কলার সুনাম থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে কলা কিনে নিয়ে যায়। আর বিষমুক্ত এসব কলা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরাও।
জানা যায়, বেতাগী পৌরসভার কালীবাড়িতে সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার বসে এ হাট। প্রায় অর্ধশত বছর ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী এই হাটে বিভিন্ন জাতের কলা বিক্রি করে আসছেন কৃষকরা। বেতাগী পৌরসভা ছাড়াও বিবিচিনি, বেতাগী সদর ইউনিয়ন, হোসনাবাদ, মোকামিয়া, বুড়ামজুমদার, কাজিরাবাদ,সরিষামুড়ি, সোনারবাংলা, শৌলজালিয়া, আওড়াবুনিয়া, নিয়ামতি থেকে ট্রলার, ভ্যান, মাহিন্দ্রায় করে কৃষকরা বাগান থেকে বিভিন্ন প্রজাতির কলা নিয়ে আসেন এবং বিক্রি করেন।
কাক ডাকা ভোর থেকে সাগর, চিনি চম্পা, সবরিসহ বিভিন্ন জাতের কলা সারি সারি করে সাজিয়ে রাখা হয় এ হাটে। এরপর বেপারিদের সঙ্গে দর-কষাকষি করে কলা বিক্রি করতে হয় কৃষকদের। জাত ও আকার ভেদে এই হাটে কলার প্রতি কাঁদি বিক্রি হয় ৩ শ থেকে ১২ শ টাকা পর্যন্ত। সকাল ৬টা থেকে বেলা ৮টা পর্যন্ত এই হাটে চলে কলা কেনাবেচা। দুই ঘণ্টার এই হাটে বিক্রি হয় ১৫-২০ লাখ টাকার কলা।
হাটে আসা কলা বিক্রেতারা জানান, তাদের পূর্বপুরুষদের আমল থেকে কালীবাড়ির এই হাটে কলা বিক্রি করে আসছে। দূর-দূরান্ত থেকে হাটে পাইকাররা কলা কিনতে আসায় কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী এই কলার হাটটিতে হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হয়। কালীবাড়ির কালী মন্দিরের পেছনেই রয়েছে উন্নতমানের ঘাট।
ক্রেতারা কলা কিনে নৌকা বা ট্রলারযোগে তাদের গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারে অতি সহজে। এছাড়া সড়ক পথে কালীবাড়ি থেকে বিভিন্ন স্থানে ভ্যান, মিনি ট্রাক, পিকআপ ও অটোতে করে নিয়ে যেতে পারে। কলা নিতে আসা বেতাগী পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণ কান্ত ঘরামী বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কলা কিনতে আসে। এজন্য দাম ভালো পাওয়া যায়।’
বেতাগী কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ বলেন, ‘এ বছর বেতাগীতে ৩৫৫ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় উপজেলার বিখ্যাত সবরি ও অমৃত সাগর কলা। এ অঞ্চলের কলা বিষমুক্ত ও সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা অনেক।’