১ হাজার টাকা মূল্যমানের লাল নোট ৩০ মের পর থেকে বাতিল হবে বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এই বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরণের ধুম্রজাল তৈরি হয়। তবে, এই তথ্য গুজব বলে এর আগেই জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
১৪ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ১ হাজার টাকা মূল্যমানের লাল নোট বা অন্য কোনো নোট অচল হিসেবে ঘোষণা করেনি। জনসাধারণকে বিভ্রান্তিকর তথ্য আমলে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় ঐ বিজ্ঞপ্তিতে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নব নিযুক্ত গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি জানান এটা খুব সাধারণ বিষয় নয়। আমরা ভারতের অভিজ্ঞতা দেখেছি ৯৮ ভাগ টাকা আবার ফেরত চলে আসছে। এই সিদ্ধান্ত নেয়া মুশকিল আছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এটা করার আগে বড় একটা সিদ্ধান্তের ব্যপার। এখনই কিছু বলতে চান না বলে জানান গভর্নর। এই মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপযুক্ত সময় নয় বলেও জানান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বাংলাদেশে এক হাজার টাকার নোটের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশে সর্বোচ্চ কাগুজে নোট। বিশ্লেষকরা বলছেন বেশি টাকার নোটের সুবিধা এবং অসুবিধা দুই দিকই আছে। তবে সমস্যা হচ্ছে বড় নোট থাকায় তা চোরাচালান, অর্থ পাচার, ঘুস লেনদেনসহ নানা অবৈধ কাজে এই নোটের ব্যবহার বেড়ে যায়। আর এই বড় নোট জালও হয় বেশি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ব্যাংক নোট বলতে ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ এবং এক হাজার টাকা চালু রয়েছে। আর এক, দুই ও পাঁচ টাকার নোট ও কয়েন হলো সরকারের। বাংলাদেশে এক হাজার টাকার নোট চালু হয় ২০০৮ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সাম্প্রতিক বছর গুলোয় বাজারে প্রচলিত নোটের মধ্যে এক হাজার টাকার নোটের পরিমাণ দ্রুত গতিতে বাড়ছে। ২০১১ সালেও দেশে মোট ব্যাংক নোটের ২৪.৫৪ শতাংশ ছিল হাজার টাকার নোট। এখন তা অর্ধেকেরও বেশি।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক যে দুই হাজার টাকার নোট চালুর চিন্তা করছে সেটা এখন করা ঠিক হবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের এখন বাজারের যা অবস্থা তাতে এক হাজার টাকার নোট চলতে পারে, কিন্তু এর চেয়ে বড় নয়। এর সমাধান হিসেবে ক্যাশলেস ট্রান্সজেকশনের কথা বলেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশেও স্বাধীনতার পরসহ মোট দুইবার ১০০ টাকার নোট ব্যান্ড করা হয়েছিলো। এর উদ্দেশ্য ছিলো চোরাচালান এবং অবৈধ লেনদেন বন্ধ করা বলে জানান বিশ্লেষকরা।