কয়েকশ শিক্ষার্থী সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ দেখানোর পর অন্তর্বর্তী সরকার এ সিদ্ধান্ত নিল।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করল সরকার।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, “বাকি পরীক্ষাগুলো আর হবে না। ফলাফল কীভাবে দেওয়া হবে সে সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।”
চলমান এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার কয়েকশ শিক্ষার্থী সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ দেখানোর পর অন্তর্বর্তী সরকার এ সিদ্ধান্ত নিল।
চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩০ জুন। তবে বন্যার কারণে সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ৯ জুলাই।
এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ১৬ জুলাই রাতেই সারা দেশে স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিকসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়।
পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে ১ অগাস্ট পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা স্থগিত করে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটি।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ৪ অগাস্ট থেকে পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষাগুলোও স্থগিত হয়ে যায়।
বার বার স্থগিতের পর ১১ অগাস্ট থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর সহিংসতায় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে গেলে পরীক্ষা ফের স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
স্থগিত পরীক্ষাগুলো আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল, সেজন্য নতুন সূচিও প্রকাশ করেছিল কর্তৃপক্ষ; কিন্তু এর মধ্যে পরীক্ষা দিতে অনাগ্রহী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে।
স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের দাবিতে সোমবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে বিক্ষোভ করার পর মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন কয়েকশ শিক্ষার্থী।
তারা বলেন, কয়েকটি পরীক্ষা হওয়ার পর দেশের পরিস্থিতির কারণে তারা আটকে আছেন। এ অবস্থায় তারা আর বাকি পরীক্ষাগুলো দিতে চান না।
তাদের দাবি ছিল, যে কয়টি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, তার ভিত্তিতে এবং স্থগিত বিষয়ের পরীক্ষা এসএসসির সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে ম্যাপিং করে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হোক।
এই দাবি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের অনেকে পরনে কলেজের ইউনিফর্ম দেখা যায়।
দুপুর ২ টার দিকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী স্লোগান দিতে দিতে মুক্তাঙ্গণ প্রান্তের গেইট দিয়ে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন। তারা ছয় নম্বর ভবনের নিচে জড়ো হয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন– ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, আমাদের দাবি মানতে হবে।’
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশ্বাস দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এরইমধ্যে খবর আসে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপাতিত্বে এক সভায় এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার তখন জানান, ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও তা আরো দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই সভায়।
সেই সঙ্গে ঠিক হয়েছে, শিক্ষার্থীদের অর্ধেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। অর্থাৎ, আগে যে বিষয়ে আটটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হত, এখন সেই একই বিষয়ে চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। পরীক্ষার জন্য আগের মতই পূর্ণ সময় থাকবে।
তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অটল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরে তাদের পক্ষ থেকে দশ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি এবং আলোচনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যান।
অন্যরা তখনও বাইরে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা সিঁড়ি বেয়ে সচিবালয়ের ১৮ তলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উঠে যান। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন তারা।
সচিবালয়ের সব প্রবেশপথ এ সময় আটকে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরাদের দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
কয়েক দফা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিতের পর নতুন সময়সূচিতে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও শিক্ষার্থীদের দাবিরে মুখে সে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পরীক্ষার সময় আরও দুই সপ্তাহ পেছানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, এরই মধ্যে যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে; সেগুলোর ভিত্তিতেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার।
কারণ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে অনেক পরীক্ষার্থীও আহত হয়েছেন এবং পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে পরীক্ষায় বসার মতো অবস্থা তাদের নেই।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ১৬ জুলাই রাতেই সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়।
পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে ১ অগাস্ট পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা স্থগিত করে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটি।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ৪ অগাস্ট থেকে পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষাগুলোও স্থগিত হয়ে যায়।
বার বার স্থগিতের পর ১১ অগাস্ট থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা শুরুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর সহিংসতায় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে গেলে তখন পরীক্ষা স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।