শেখ হাসিনা ঠিক কোন ‘ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে’ ভারতে রয়েছেন, সে ব্যাপারেও এখনও পর্যন্ত ভারত সরকার সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে।
অর্থাৎ তিনি কোনো বিশেষ ভিসায় ভারতে অবস্থান করছেন, না কি তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম) দেওয়া হয়েছে – এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকার কিছুই জানায়নি।
এই কারণেই প্রশ্ন ওঠছে, ভারতে এই মুহূর্তে হাসিনার অবস্থানের ইমিগ্রেশন (অভিবাসন)-গত বৈধতাটা ঠিক কী এবং সেই স্ট্যাটাস কতদিন পর্যন্ত বৈধ থাকতে পারে?
গত ১৬ অগাস্ট (শুক্রবার) বিকেলে দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে প্রশ্ন করা হয়, প্রায় দু’সপ্তাহ হল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে অবতরণ করেছেন। আপনি কি আমাদের বলতে পারেন তিনি কি নিয়মিত ভিসায় এ দেশে (ভারতে) আছেন? না কি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন? না কি তাকে কোনো ধরনের গৃহবন্দি বা অন্তরীণ অবস্থায় রাখা হয়েছে?
রণধীর জয়সওয়াল তখন বলেন, আমরা গত সপ্তাহেও এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছিলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভারতে আসার বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছিল খুব স্বল্প সময়ের নোটিশে। এই পরিস্থিতি এখনও ক্রমাগত পাল্টাচ্ছে (‘ইভলভিং’)। এই মুহূর্তে অন্তত তার (শেখ হাসিনার) পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের নতুন করে কিছু জানানোর নেই।
খোঁজ নিয়ে জানাযায় যদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়া শেখ হাসিনার ‘ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল’ পাসপোর্ট বাতিল না হয় তবে সেই পাসপোর্টের সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনও ভিসা ছাড়াই ভারতে অবস্থান করতে পারেন। ফলে এই সময়সীমার মধ্যে অন্তত ভারতে তার বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ আইনসম্মত, ভারতের এ ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রয়োজনও নেই।
ভারতে শেখ হাসিনার এই মুহূর্তে অবস্থানের ভিত্তিটা হল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘সংশোধিত ট্র্যাভেল অ্যারেঞ্জমেন্ট’। দুই দেশের শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী সরকারের মধ্যে ঢাকাতে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই।
এই সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশের ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীরা ভারতে ভিসা ছাড়াই ৪৫ দিন থাকতে পারবেন, আবার অন্যদিকে ভারতের ওই বিশেষ ধরনের পাসপোর্টধারীরা বাংলাদেশেও ঠিক একই সুবিধা পাবেন।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শেখ রেহানার ক্ষেত্রে অবশ্য এই জটিলতাটুকুও নেই, কারণ তিনি ব্রিটেন বা যুক্তরাজ্যের পাসপোর্টধারী ফলে সাধারণ ‘ভিসা অন অ্যারাইভালে’ই (ভারতের মাটিতে পা রাখার পর ব্রিটিশ নাগরিকদের যে ভিসা মঞ্জুর করা হয়) তিনি কার্যত যতদিন খুশি ভারতে থাকতে পারেন।
শোনা যাচ্ছিল, ভবিষ্যতে ভারত থেকে ব্রিটেনে পাড়ি দেবেন শেখ হাসিনা। বোন রেহানার বাড়ি রয়েছে লন্ডনে। ভবিষ্যতে সেখানেই পাকাপাকি ভাবে থাকবেন।
তবে হাসিনাকে ব্রিটেনে আশ্রয় দিতে রাজি নয় দেশটির রাজনৈতিক মহলের একাংশ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেবার এমপি রূপা হক স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রিটেন সরকারের উচিত নয় হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির মুখেও একই সুর।
রেহানা সম্ভবত শীঘ্রই তার লন্ডনের বাড়িতে ফিরবেন। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, হাসিনাকে বিলেতে প্রবেশের অনুমতি দেবে না কিয়ের স্টার্মারের সরকার।
সূত্রের খবর, হাসিনা ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করলেও এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর পাননি। ব্রিটেনের শাসক দল লেবার পার্টি হাসিনাকে আশ্রয় দিতে চায় না। তাদের বক্তব্য, হাসিনাকে আশ্রয় দিলে দেশে উত্তেজনা ছড়াবে।
ব্রিটেনে কমপক্ষে ৭০ হাজার বাংলাদেশির বাস। তাদের অধিকাংশই হাসিনা-বিরোধী। টাওয়ার হ্যামলেটের আশপাশের অঞ্চলেও লোকে ‘হাসিনা-মুক্ত স্বাধীন দেশ’ উদ্যাপন করেছেন। এ অবস্থায় ব্রিটিশ সরকার চায় না হাসিনাকে দেশে এনে জনমানসে ক্ষোভ বাড়াতে।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.