দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাস পরেই ২০০৯ সালে পদত্যাগ করেছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। এবার পদত্যাগের বিষয়ে মুখ খুললেন সাবেক এ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
সম্প্রতি নিজের পদত্যাগ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল সেসব বিষয়ে একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি।
সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি যেদিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলাম, সেদিন কেঁদেছিলাম। আমি সেদিন অনুধাবন করতে পেরেছিলাম যে, আমি বড় একটি দায়িত্ব নিতে যাচ্ছি। আমি বাংলাদেশকে পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে খুবই উৎসাহী ছিলাম। কিন্তু আমার সঙ্গে, দেশের সঙ্গে ও দলের সঙ্গে শত্রতা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাস করি না। মাঠ পর্যায় থেকে রাজনীতি শুরু করেছি। আমি যাতে রাজনীতিতে না আসতে পারি সে জন্য ওপর থেকে অনেকেই বাধা দিয়েছিল। প্রথম টার্মে যখন নির্বাচিত হয়, সেবার আমার দল মাত্র ৫৮টা আসন পায়। বিরোধী দলের রাজনীতি করতে অনেক জুলুম সহ্য করতে হয়েছে। আন্দোলনে-মিটিং-মিছিলে সক্রিয় ছিলাম। দলে আমার কন্ট্রিবিউশন ছিল। আমি কারো পরিচয়ে মন্ত্রিত্ব চাইনি। আমি মনে করি, নিজের যোগ্যতায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলাম।’
মন্ত্রিত্ব কেন ছেড়েছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি দুর্নীতি দেখেছি, অনিয়ম দেখেছি। বিডিআর বিদ্রোহের তদন্তকাজ আমার ভালো লাগেনি, সেখানে অনিয়ম হয়েছে। আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিলাম না। একটা পর্যায়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কথা না শুনতে। তারা আমার কথা শুনবে না কিন্তু আমাকে আবার ওই পদে থাকতে হবে! সুতরাং আমার মনে হয়েছিল, আমাকে এবং আমার পরিবারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হচ্ছিল না। এরপরও পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে যাই। পরে সেখান থেকে তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। আমি বারবার বলেছি, আমাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি আমাকে ছাড়বেন না। ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর ফোনালাপ। আমি তাকে (শেখ হাসিনা) বারবার বলেছি আমাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) বলেন, না তোমাকে থাকতে হবে। তোমার কী লাগবে? দলের পদ, যুগ্ম সম্পাদক? কিন্তু আমি বারবার বলেছি থাকব না।’
সোহেল তাজ বলেন, ‘সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল- তিনি (শেখ হাসিনা) ফোনকলে গান গাওয়া শুরু করলেন। তিনি গাইলেন, “আমি তোমাকে ছাড়ব না, আমি কাউকে ছাড়ি না”। আমি শুনে অবাক হয়ে গেলাম। এটার মানে কি? প্রধানমন্ত্রী কি আমাকে হুমকি দিলেন, নাকি স্নেহ দেখালেন! অনেকেই বলেন, এটা স্নেহের একটা বিষয় ছিল। এরকম অনেকগুলো কারণে আমি পদত্যাগ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘পদত্যাগের পর আমাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বাংলাদেশে আসলে গোয়েন্দারা আমাকে অনুসরণ করত। ওই সময় আবার অনেকের গুম হওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল। একটা আতঙ্কের পরিবেশ ছিল। আমার এক ভাগিনাকে তার ব্যক্তিগত কারণে গুম করা হয়েছিল।’
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.