গাজীপুরে ২ ঘণ্টা চুক্তির বিয়ে, মসজিদেই সহবাস

মসজিদের ঈমাম ও খতিব কপিল উদ্দিনের পাহারায় মসজিদের সিঁড়ির পাটাতনেই সহবাস করেন অভিযুক্ত মোহতামিম ইসমত আলী আশিকি। মাসুম পারভেজ।। গাজীপুরের শ্রীপুরে হিল্লা বিয়ের ফতোয়া সম্পর্কে জানতে আসলে ২ ঘন্টা চুক্তিতে বিয়ে করেন একটি মাদ্রাসার মোহতামিম ইসমত আলী আশিকি। বিয়ের ১০ মিনিটের মাথায় মসজিদের ঈমাম ও খতিব কপিল উদ্দিনের পাহারায় মসজিদের সিঁড়ির পাটাতনেই সহবাস করেন অভিযুক্ত মোহতামিম ইসমত আলী আশিকি।

ভুক্তভোগী নারী জানান, হুজুর ফতোয়া ও ইসলামী ব্যাখ্যা সবই জানেন, আমি তো কিছুই জানি না, ভেবেছিলাম হুজুর কি পাপ করবে? হুজুর ভুল করবে এটা আমার বিশ্বাসে ছিল না, কিন্তু ইসমত আলী আমাকে আল্লাহর ঘরের ভিতরেই এরকম কাজ করা কি ঠিক হয়েছে?

মসজিদের ঈমামের সহযোগিতায় মাদ্রাসার মোহতামিম ইসমত আলী আশিকির এই ফতোয়াবাজি বিবাহের ১ ঘন্টার মধ্যেই সহবাস ও তালাকের বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই পরিস্থিতিতে মুসল্লীদের শান্ত করা ও মসজিদের স্বার্থ রক্ষার্থে দ্রুত মসজিদের ঈমাম কপিল উদ্দিনকে বরখাস্ত করে সেখানকার মসজিদ কমিটি।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার কামালপুর গ্রামের ইসমত আলী আশিকি। মসজিদের ভিতরে যৌনমিলনে তাকে সহযোগিতা করে টেপির বাড়ি পশ্চিম পাড়া গ্রামের আরফান আলী শাহী জামে মসজিদের ঈমাম ও খতিব কপিল উদ্দিন। অভিযুক্ত ইসমত আলী আশিকি গত ৪ বছর যাবত টেংরা মধ্যপাড়া জামিউল উলুম ও ক্বওমি মাদ্রাসা ও এতিম খানার মোহতামিমের দায়িত্ব পালন করে আসছে। ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার ১৪ই ডিসেম্বর ২০২৪ রাত আনুমানিক এশার নামাজের পর। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বাক্ষী কপিল উদ্দিন চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, নোয়াখালী অঞ্চলের এক গৃহবধূকে ঝগড়াঝাটির পর ঐ নারীর স্বামী ৩ তালাক প্রদান করেন। অত:পর ঐ নারীকে গাজীপুরে তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে পাঠানো হয় বিজ্ঞ আলেমদের সাথে পরামর্শ করার জন্য। চাচাতো ভাই ঐ নারীকে মোহতামিম ইসমত আলী আশিকি হুজুরের নিকট নিয়ে আসেন ফতোয়া জানার জন্য। আশিকি জানান ঐ নারীকে অন্যত্র বিয়ে না দিলে সংসার করা হালাল হবে না, ভুক্তভোগী নারীকে ঈমামের সহযোগিতায় বিয়ে নামক ফতোয়া ও ছেলেখেলা শুরু করেন লম্পট হুজুর ইসমত আলী আশিকি। মসজিদের লাইট নিভিয়ে অন্ধকার পরিবেশে রূপান্তরিত করেন সহযোগী কপিল উদ্দিন। শারিরীক মিলনের পর ইসমত আলী ঐ নারীকে মসজিদেই থাকা অবস্থায় তালাক প্রদান করেন! ঐ নারী পূর্বের স্বামীর সাথে পূনরায় সংসার করতে পারবেন বলেও ফতোয়া দেন ইসমত আলী আশিকি।

বিষয় টি নিয়ে ইসমত আলী আশিকি জানান, ফতোয়ার জন্য তারা আমার নিকট এসেছিল, পরে তারা আমাকে অনুরোধ করলে অন্যজনের মাধ্যমে ঐ তালাকপ্রাপ্তা নারীকে হালাল করে দিয়েছি। কার সাথে হালাল করেছেন, এমন প্রশ্নে বিব্রত হয়ে আশিকি জানান, একজন ফকিরের সাথে হালাল করেছি। ফকিরের নাম ঠিকানা বলতে পারবো না। পরবর্তীতে বিয়ে পড়ানো ঈমাম কপিল উদ্দিনের স্বীকারোক্তি উল্লেখ করলে ইসমত আলী জানান, সবাই আমার সম্মান হানীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে এবং ১ লক্ষ টাকাও চাঁদা দাবি করেছে। ভুক্তভোগী ঐ নারীর স্বামী ঘটনা জানার পর দেশবরেণ্য আলেমদের সাথে যোগাযোগ করলে জানতে পারেন, চুক্তিভিত্তিক হিল্লা বিয়ে শরিয়ত সম্মত নয়, বরং এটি প্রতারণার শামীল! ভুক্তভোগী নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত মোহতামিম ইসমত আলী আশিকি ও ঈমাম কপিল উদ্দিন প্রতারণা করেছে। ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার ও শাস্তির দাবি করেন সচেতন মুসল্লী ও এলাকাবাসী।