প্রায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারের ১০ হাত দৈর্ঘ্য ও ছয় হাত প্রস্থের একটি ঘরে বন্দী আছেন বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। স্বামী হত্যার প্রধান সাক্ষী থেকে পরিকল্পনার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিন্নির এখনকার ঠিকানা কাশিমপুর মহিলা কারাগারের কনডেম সেল। প্রায় দুই বছর আগে কয়েদির পোশাক পরা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে তাকে হতাশাগ্রস্ত দেখা যায়। বর্তমানে তিনি কেমন আছেন?
কারাগারে জীবনযাত্রা
কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, সপ্তাহে একদিন পাঁচ মিনিট পরিবারের সাথে কথা বলার সুযোগ পান মিন্নি। অন্যান্য আসামিরা সেলের বাইরে যাওয়ার অনুমতি পেলেও, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে কনডেম সেল ও বারান্দায় থাকতে হয়। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলছেন তিনি এবং কারাগারের দেওয়া অন্যান্য খাবার খেলেও কোনো এক অজানা কারণে মাংস খান না।
কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার জানান, “মিন্নির শরীর এখন ভালো আছে। কারাবিধি অনুযায়ী তিনি সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।”
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নারী বন্দিরা
বর্তমানে দেশের ৬৮টি কারাগারে অর্ধ শতাধিক নারী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন। কাশিমপুর মহিলা কারাগার, যেখানে মিন্নি আছেন, সেটি ২০০৭ সালে উদ্বোধন হয়। তবে, স্বাধীনতার পর থেকে কোনো নারী আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নজির নেই, ফলে এই কারাগারে কোনো ফাঁসির মঞ্চ নেই।
হাইকোর্টে জামিন আবেদন
চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর হাইকোর্টে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই আবেদন উপস্থাপন করা হয়।
মিন্নির আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল বলেন, “আবেদনটি যাতে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় তোলা হয়, সে জন্য মেনশন স্লিপ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি এই সপ্তাহেই আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় উঠবে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের জামিনের নজির নেই, তবে কোথাও নিষেধও নেই। এ মামলাটি ব্যতিক্রম। আবেদন মঞ্জুর হলে এটি নজির সৃষ্টি করবে।”
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনার কলেজ রোডে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন, যেখানে মিন্নিকে ১ নম্বর সাক্ষী করা হয়। পরে মামলাটি নতুন মোড় নেয় যখন মিন্নির শ্বশুর তার পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ করেন।
ওই বছরের ১৬ জুলাই পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মিন্নিকে। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং আদালতে হাজির করা হলে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। তিন দিন পর আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়। তবে, মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের অভিযোগ, নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিন্নিকে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নির জামিন মঞ্জুর করে। এরপর, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির ২৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান রায় ঘোষণা করেন, যেখানে মিন্নিসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনের খালাস দেওয়া হয়।
কারাগারে রোজার মাসে কেমন আছেন মিন্নি?
কারাগারে বর্তমানে রোজার মাসে কেমন আছেন সে সম্পর্কে এ প্রতিবেদন খবর নিতে যেয়ে কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.