দেশে নতুন সংকট তৈরির চেষ্টা হচ্ছে : নুর

নির্বাচন এবং সংস্কারকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেশে নতুন একটি সংকট তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) মানিকগঞ্জের সিংগাইর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

নুরুল হক নুর বলেন, একটা গোষ্ঠী রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চায়। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদসহ প্রায় ৫০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে, ছাত্রদেরও দল আছে। আমরা যখন নির্বাচন চাইব, তখনই নির্বাচন হবে।

গণঅধিকার পরিষদের এই সভাপতি বলেন, ইতোমধ্যে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছেন। আগামী ডিসেম্বর অথবা পরের বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আপনাদের এই এলাকায় এমপি ছিল। তেলবাজি আর চাটুকারিতা করে এমপি পদ বাগিয়ে নিয়েছিল মমতাজ বেগম। আমার দুঃখ হয়, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় জননন্দিত ছিলেন, অথচ আওয়ামী লীগ করে শেষ পর্যন্ত চরম নিন্দিত হয়েছেন।

ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন জাহিদ মালেক। করোনাকালীন জুতা-ঝাড়ু নিয়ে মানুষ তার বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা তাদের এমপি-মন্ত্রীর পদ থেকে সরান নাই। কারণ, শেখ হাসিনা এই সব গোপাল ভাঁড়দের দিয়েই দেশ চালিয়েছেন।

দেশে ৫৩ বছরের রাজনীতিতে বহু সরকার ও বহু প্রধানমন্ত্রী দেখেছে দেশের জনগণ উল্লেখ করে নুর বলেন, নির্বাচনের আগে বহু আশা-আকাঙ্ক্ষা দেখালেও ক্ষমতায় গিয়ে সব ভুলে যায় বিজয়ীরা। অর্থাৎ যে লংকায় যায়, সেই রাবণ হয়। মানুষ আর এই রাজনীতি চায় না। মানুষ দেশের উন্নয়ন চায়। কাজেই দেশের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য নির্বাচিত সরকার যেমন প্রয়োজন, আবার সেটাকে দীর্ঘমেয়াদি ও সুশৃঙ্খল করার জন্যও সংস্কার প্রয়োজন।

রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের সময় এখন জানিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে এখন নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার সময়। কাজেই জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য উপযুক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

জনসভায় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, আপনাদের এই এলাকায় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সময়ে মমতাজ বেগম এমপি হয়েছিল। সংসদে শেখ মুজিবুর রহমান আর শেখ হাসিনার কথা বলে টেবিল থাপড়িয়ে ও গান গেয়ে সে এমপি হয়েছিল। এখানে আসার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে শুনলাম মমতাজের নাকি মেম্বার হওয়ারও যোগ্যতা নেই। তাহলে বোঝেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা কাদের এমপি বানিয়েছিলেন।

আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই পতিত আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে না জানিয়ে রাশেদ খান আরও বলেন, আমাদের দাবি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক।

গণঅধিকার পরিষদের মানিকগঞ্জ সিংগাইর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবুর সঞ্চালনায় ও সভাপতি আলামিন দেওয়ানের সভাপতিত্বে জনসভায় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান রিজু, মাহফুজুর রহমান খান, গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।