প্রেমের টানে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসা নতুন কিছু নয়। তবে এবার ব্যতিক্রমী এক ঘটনা ঘটেছে ভোলায়, যা এখন জেলাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব, তারপর সেই বন্ধুর বোনের প্রেমে পড়ে এক চীনা যুবক এখন হয়ে উঠেছেন ভোলার ‘বিদেশি জামাই’। দুই পরিবারের সম্মতিতে হয়েছে ধুমধাম আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিয়ে।
ভোলার সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শরীফ খাঁ বাজার এলাকার বাদশা চেয়ারম্যান বাড়িতে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এই ব্যতিক্রমী ঘটনায় পুরো এলাকা তোলপাড়। দূরদূরান্ত থেকে শত শত মানুষ ছুটে আসছেন চীনা জামাইকে একনজর দেখার জন্য।
কীভাবে শুরু এই ভালোবাসার গল্প?
জানা যায়, ভোলার মো. রনি নামে এক তরুণের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউচ্যাটে পরিচয় হয় চীনের লুনজু শহরের যুবক ইরিছা চং ওরফে মাওয়েন হুয়ার। রনির কাছ থেকে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের গল্প শুনেই ঘুরতে আসার সিদ্ধান্ত নেন ইরিছা। ঢাকায় কয়েকদিন কাটানোর পর রনির বাড়িতে ভোলায় বেড়াতে আসেন তিনি। আর সেখানেই ঘটে জাদুকরি মোড়—রনির ছোট বোন নাবিয়া আক্তারের প্রেমে পড়ে যান তিনি।
দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে
ইরিছা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও পরিবেশে মুগ্ধ হন। পরে নাবিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং দুই পরিবারের আলোচনার পর গত ৪ মে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে নববধূকে নিয়ে চীনে ফিরবেন ইরিছা, সঙ্গে রনিও যাবেন বলে জানিয়েছেন।
ইরিছার কণ্ঠে ভালোবাসার অঙ্গীকার
ইরিছা বলেন, “আমি বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিলাম, কিন্তু এখানে এসে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, জীবনের সঙ্গীকেও খুঁজে পেয়েছি। আমি আশা করি, স্ত্রী নাবিয়াকে সারাজীবন সুখে রাখতে পারবো। যতদিন বাঁচবো, নাবিয়াকে নিয়েই বাঁচবো।”
নাবিয়ার অনুভূতি
নাবিয়া বলেন, “প্রথমে আমাদের পরিবার রাজি ছিল না। কিন্তু পরে তারা খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হন ইরিছা সত্যিই একজন ভালো ও মুসলিম ছেলে। এরপর দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয়।”
তিনি জানান, এইচএসসি পাস করার পর অনার্সে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এখন সুযোগ পেলে চীনে গিয়েও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান।
‘বিদেশি দুলাভাই’ পেয়ে খুশি পরিবার
নাবিয়ার চাচাতো ভাই মো. জুয়েল ও মো. রায়হান জানান, চীনা দুলাভাই পেয়ে তারা অনেক খুশি। এতদিন অন্য জেলার বিদেশি জামাইয়ের কথা শুনতেন, এবার নিজেরাই পেয়ে গেছেন একজন।
তারা জানান, বোনের বিয়েতে অনেক আনন্দ হয়েছে, নাচ-গানও হয়েছে। যদিও দুলাভাই বাংলা ভাষা বোঝেন না, তবুও তার প্রতি উৎসাহ কমেনি আশপাশের মানুষের। প্রতিদিনই শত শত মানুষ ভিড় করছেন তাকে দেখতে।
ভোলাবাসীর কৌতূহল ও ভালোবাসা
ভোলার শহর থেকে ঘুরতে আসা মো. ফিরোজ মিয়া ও আনোয়ার হোসেন জানান, চীনা জামাইকে এক নজর দেখতেই তারা এসেছেন। তার দাম্পত্য জীবনের জন্য তারা দোয়াও করেছেন।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.