অবশেষে জানা গেল মধ্যপ্রাচ্য আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ’র হত্যাকারীর পরিচয়। সম্প্রতি নতুন একটি প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতারা খুনির পরিচয় উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছেন।
সাংবাদিক শিরিন হত্যাকারীর নাম অ্যালন স্কাজিও। ২২ বছর বয়সি এই খুনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১১ মে ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি অভিযানের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হন শিরিন আবু আকলেহ। সেই সময় তিনি হেলমেট ও স্পষ্টভাবে ‘প্রেস’ চিহ্নযুক্ত ভেস্ট পরা ছিলেন।
আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক তখনই এই হত্যাকে ঠাণ্ডা মাথায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে ঘোষণা দেয়।
তবে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ ও তাদের মিডিয়া সেই সময় দাবি করে জানায় যে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের গুলিতেই সাংবাদিক শিরিনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, ‘হু কিল্ড শিরিন?’ নামের ৪০ মিনিটের অনুসন্ধানমূলক প্রামাণ্যচিত্রটি বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক মিডিয়া সংস্থা ‘জেটেও’ প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়েছে, শিরিনকে হত্যা করেন এক ইসরাইলি সেনা। ২০ বছর বয়সি ওই সেনা তখন প্রথমবারের মতো দখলকৃত পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযানে অংশ নেন।
একইসঙ্গে এই প্রামাণ্যচিত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে তার মিত্র ইসরাইলকে দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টার বিষয়টিও উন্মোচন করা হয়েছে।
প্রামাণ্যচিত্রের নির্বাহী প্রযোজক ডিওন নিসেনবাম আল জাজিরাকে জানান, তারা এই হত্যার পেছনে প্রকৃত ব্যক্তি কে, সেটি বের করতেই অনুসন্ধান শুরু করেন। যা এখন পর্যন্ত ইসরাইলের অতি গোপনীয় একটি তথ্য। তারা আশা করছেন, এই অনুসন্ধান যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে তদন্তের পথ খুলে দিতে পারে।
নিসেনবাম বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্তে এসেছিল যে, শিরিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু পরে সেই সিদ্ধান্ত প্রশাসনের ভেতর থেকেই বাতিল করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বেশকিছু উদ্বেগজনক প্রমাণ পেয়েছি, যা ইসরাইল ও বাইডেন প্রশাসন উভয়েই শিরিনের হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিয়েছে এবং হত্যাকারী সেনাকে দায়মুক্তি দিয়েছে’।
এর আগেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘের তদন্তে উঠে এসেছে, সাংবাদিক শিরিনকে ইচ্ছাকৃতভাবেই ইসরাইলি সেনারা গুলি করে হত্যা করেছে।