ঢাকাই সিনেমার নায়ক আরিফিন শুভ। ২০২৩ সালের ২৪ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তার মা খাইরুন নাহার। আজ বিশ্ব মা দিবস। মায়ের শূন্যতায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছেন শুভ। মাকে হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কীভাবে বেঁচে আছেন, সেই অনুভূতি উজার করে দিয়েছেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
আরিফিন শুভ বলেন, “প্রিয় মা, দেখতে দেখতে তোমার যাওয়ার প্রায় এক বছর চার মাস হলো। তুমি নেই ভাবতেই পারছি না। এখনো বোঝার চেষ্টা করছি যে, কী হলো আমার জীবনে। আমি কি ঘুম থেকে উঠে দেখব, তুমি পাশের রুমটাতেই আছো? আমাকে ডাকছো? সবকিছু কেমন যেন হয়ে গেল।”
মায়ের শাড়ি দিয়ে পাঞ্জাবি বানানোর ঘটনা বর্ণনা করে শুভ বলেন, “ঈদ মানেই তো আমার প্রিয় মায়ের সঙ্গে মধুর সময়। গত ঈদে সেটা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ঈদে তোমার শাড়ি দিয়ে পাঞ্জাবি বানিয়ে পরেছি। তোমার স্মৃতি চিরজাগ্রত রাখতে চাই। মা, জানো যখন ওই শাড়ি পরে তোমার সঙ্গে (কবর জিয়ারত) দেখা করতে যাচ্ছি, নিচে গার্ডরা বলল, এটা আন্টির শাড়ি না, স্যার? ভালো লাগল এই ভেবে যে বিল্ডিংয়ের গার্ডরাও তোমাকে দীর্ঘদিন নোটিশ করেছে।”
মা-হীন শূন্য জীবন। শুভর ভাষায়, “আমার সাফল্যে তোমার চেয়ে কেউ বেশি খুশি হতো না। তুমি থাকতে সব সময় ছায়ার মতো। আগলে রাখতে। সেই তুমি আমার জীবন থেকে সরে গেলে। তোমার সঙ্গে কাটানো মধুর সময় আজ সবই স্মৃতি। শূন্যতা চারদিকে।”
মায়ের প্রয়াণ এখনো অবিশ্বাস্য শুভর কাছে। এ নায়ক বলেন, “ডিসেম্বর এলেই হঠাৎ কাজের মধ্যেই মাথায় চলে আসে– ২৪ জানুয়ারি আবার ফিরে আসছে। সময় বড়ই স্বার্থপর! একটা একটা দিন গুনতাম, আর নিজের অজান্তে ভাবতাম, আমি কি কোথাও ভুল করছি সময়ের হিসাব করতে, নাকি আসলেই এক বছর হয়ে গেছে?”
মা হারানোর শোক এখনো কাটাতে পারেননি শুভ। তিনি বলেন, “লাখো কোটি শব্দ লিখেও এই জীবনে কোনো দিন আমি বোঝাতে পারব না, আমার জন্য তুমি কী ছিলে এবং আছো! জীবন চলে যাচ্ছে মা। কিন্তু একটা বিশাল শূন্যতা নিয়ে! বছরের ৩৬৫ দিনের প্রতিটি মুহূর্তে শুধু এ প্রশ্নই করেছি নিজেকে, সত্যিই তুমি নেই মা? নাকি আমি কোথাও ভুল করছি– এটা কোনো দুঃস্বপ্ন নয় তো? তোমাকে হারানোর শোক আজও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। মা ভালো থেকো মা।”