জেনে অথবা না জেনে সন্তানের প্রতি ‘গিল্ট-ট্রিপিং প্যারেন্টিং’ করছেন না তো? এ হলো প্যারেন্টিংয়ের এমন একটি ধরণ-যার মাধ্যমে বাবা মায়েরা তার সন্তানের অপরাধবোধ তুমুলভাবে জাগিয়ে তোলে। সন্তানকে ধারাবাহিকভাবে দোষারোপ করাও এই প্যারেন্টিংয়ের মধ্যেই পড়ে। যেমন—সন্তানকে এসব বলা যে, ‘তোমার পেছনে ছুটতে ছুটতে আমার ক্যারিয়ার হলো না’, ‘তোমাকে খাওয়াতে গিয়ে আমি নিজে খাওয়ার সময় পায়নি’, ‘তোর স্বাদ-আহ্লাদ পূরণ করতে করতে আমি আমার স্বাদ-আহ্লাদ ভুলে গিয়েছি’ ইত্যাদি।
সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. জন গটম্যান এর মতে, ‘‘শিশুদের মধ্যে অপরাধবোধ জাগিয়ে তাদের বাধ্য করার চেষ্টা সাময়িক ফল দিলেও, এটি সন্তান এবং পিতামাতার মধ্যে গভীর আস্থার সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। শিশুরা বাধ্য হয় বটে, কিন্তু বাবা মায়ের প্রতি ভালোবাসা বা শ্রদ্ধার কারণে নয়, বরং শাস্তি বা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ে।’’
গিল্ট-ট্রিপিং প্যারেন্টিং সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে সন্তানরা অতিরিক্ত উদ্বেগ, বিষণ্ণতা এবং কম আত্মসম্মানবোধে ভুগতে শুরু করতে পারে। তারা বড় হয়ে অন্যের দ্বারা সহজেই প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
গিল্ট-ট্রিপিং প্যারেন্টিং-এর বদলে সন্তানের জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর প্যারেন্টিং। সন্তানের কাছ থেকে ভালো আউটপুট পেতে হলে সন্তানকে সামান্য কিছুতেই দোষ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
সাধারণ হতাশায় ভুগতে থাকা বাবা-মায়েরা সন্তানের প্রতি গিল্ড প্যারেন্টিং করে থাকেন। তারা ভাবেন এতে সন্তান সতর্ক হয়, বাধ্য হয়। অথচ অপরাধবোধে ভোগা সন্তানেরা দীর্ঘমেয়াদী ডিপ্রেশনে পড়ে যায়। অনেকেই জীবনের ন্যাচারাল রিদম হারিয়ে ফেলে দিনকে দিন নিজের পড়ালেখা, খেলাধুলা কিংবা দায়িত্বের প্রতি অমনোযোগী হয়ে ওঠে এবং ব্যাকফুটে চলে যায়। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী সন্তানেরা গিল্ড প্যারেন্টিংয়ের শিকার হলে অপরাধবোধ থেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে পারে।
সন্তানের বেস্ট ভার্সন দেখতে চাইলে তাকে ভালোবাসা, উষ্ণতা, এবং আদর দিয়ে বোঝাতে হবে যে সে গুরুত্বপূর্ণ। ধৈর্য ধরে সন্তানের কথা শোনা এবং তাদের অনুভূতিকে সম্মান করা জরুরি। শাসন বা বকাঝকার পরিবর্তে ইতিবাচকভাবে উৎসাহিত করার মাধ্যমে সন্তানকে স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ করে নিতে পারেন।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.