তিন তরুণীর কারোই বাবা-মা নেই। নেই কোনো আত্মীয়-স্বজনও। স্বজনহারা এই তিন তরুণী বেড়ে উঠেছে চট্টগ্রামের রউফাবাদ সরকারি শিশু পরিবারে। সেখানেই কেটেছে কুড়িয়ে পাওয়া এই তিন তরুণীর শৈশব-কৈশোর। এর পাশাপাশি সরকারের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিদ্যালয়ে পড়াশোনাও করে তারা। এবার তিন তরুণী পা রাখলো স্বামীর সংসারে।
রউফাবাদ সরকারি শিশু পরিবারে বেড়ে ওঠা তিন তরুণীর বিয়ের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম অফিসার্স ক্লাবে মহাধুমধামে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। জমকালো সেই আয়োজনে যেন কোনোকিছুর কমতি ছিল না। জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করে তারা।
তিন তরুণী হলেন মর্জিনা আক্তার, মুক্তা আক্তার ও তানিয়া আক্তার। তাদের মধ্যে মর্জিনার বিয়ে হয়েছে ওমর ফারুকের সঙ্গে, মুক্তাকে বিয়ে করেছেন নুরু উদ্দিন এবং তানিয়ার সঙ্গে গাটছড়া বেঁধেছেন হেলাল উদ্দিন। তিন জনের বরই স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত।
তাদের বিয়েতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমন্ত্রিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকতে না পারলেও তিন তরুণীর জন্য উপহার পাঠিয়েছেন। এছাড়া বিয়েতে আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথিরাও সঙ্গে করে দামী দামী উপহার নিয়ে আসেন।
এসব অতিথিদের মধ্যে ছিলেন একাধিক এমপি. চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সব মিলিয়ে আমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা ছিল প্রায় এক হাজার।
এর আগে সন্ধ্যা নামতেই নিয়ন আলোয় রঙিন হয়ে ওঠে অফিসার্স ক্লাব। বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য রাজকীয় ভোজ আয়োজন করা হয়। খাবারের তালিকায় ছিল কাচ্চি বিরিয়ানি, চিকেন রোস্ট, কাবাব, বোরহানি, পায়েস। এছাড়াও ছিল মিষ্টিপান ও চা-কফির আয়োজন। আর বর-কনেদের রাজকীয়ভাবে সাজানো হয় বিয়ের স্টেইজ। তাদের বিয়ের পোশাকেও চাকচিক্যের কোনো কমতি ছিল না।
এমন বর্ণাঢ্য বিয়ে আয়োজনের জন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিন তরুণী।