চলতি বছরের ১১ ই অক্টোবর আশির কোঠায় পৌঁছে গেলেন অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan)। স্টারকিড নন তিনি। কবি হরিবংশ রাই বচ্চন (Harivansh Rai Bachchan) ও তেজী বচ্চন (Teji Bachchan) কোনোদিনই ভাবেননি, তাঁদের ছেলে অভিনেতা হবেন। তবে কিছুটা হলেও কেতাদুরস্ত ছিলেন অমিতাভ। তৎকালীন সময়ে পারফিউম ব্যবহার করা, চুলে নিয়মিত শ্যাম্পু করার অর্থ ছিল কেতাদুরস্ত হওয়ার লক্ষণ। অমিতাভও সেই পথে হেঁটেছিলেন। এর বেশি নিজেদের যত্ন নেওয়ার কথা ভাবতে পারতেন না পুরুষরা, তা তিনি ফিল্মস্টার হোন না কেন! অমিতাভ তো তখন তাঁর বলিউড যাত্রা শুরুই করেননি।
আশি বছর বয়সে এসে অমিতাভর অতীত ফিরে দেখলে জানা যায়, কলকাতার একটি অফিসে চাকরি করতেন তিনি। পাশাপাশি করতেন থিয়েটার। সেই সময় কলকাতার থিয়েটারেই আলাপ হয়েছিল মরাঠি মেয়ে চন্দা (Chanda)-র সাথে। অমিতাভের একটি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি ছিল যাতে কলকাতা ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসতেন তিনি। চন্দার সাথে তিন বছর সম্পর্কে ছিলেন অমিতাভ। দুজনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের ফের ছিল অন্য। অমিতাভকে বম্বে ফিরতে হল।
‘ফিল্মফেয়ার’ আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন অমিতাভ। রাজেশ খান্না (Rajesh Khanna) জিতেছিলেন সেই প্রতিযোগিতায়। অমিতাভ ছিলেন অনেক পিছনে। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি তিনি। তৎকালীন সময় মেয়েদের বিয়ের জন্য উতলা হয়ে উঠতেন মা-বাবারা। উপরন্তু অমিতাভ তখন চাকরি ছেড়ে বলিউডের মাটি দখল করতে ব্যস্ত। ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়ল চন্দার সাথে। কারণ অমিতাভের হাতে একটি ফিল্মও নেই। তাঁর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। শোনা যায়, পরিবারের চাপে বাধ্য হয়ে অন্য পুরুষের ঘরণী হয়েছিলেন চন্দা। অপরদিকে পরপর বারোটি ফিল্ম ফ্লপ করার পর তের নম্বর ফিল্ম ‘জঞ্জীর’ অমিতাভকে নায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করল বলিউডে। জীবনে এলেন জয়া (Jaya Bachchan)।
বঙ্গতনয়া জয়ার সাথে বন্ধুত্ব পরিণত হয়েছিল প্রেমে। 1973 সালে ‘জঞ্জীর’-এর সফলতা উদযাপনের জন্য প্ল্যান করা হয় লন্ডন ট্রিপ। কিন্তু হরিবংশ ও তেজীর শর্ত ছিল যেহেতু জয়াও লন্ডনে যাবেন, সেহেতু অমিতাভকে তাঁর সাথে যেতে হলে বিয়ে করতে হবে। অবশেষে জয়ার সাথে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন অমিতাভ। সেই রাতেই ছিল লন্ডনের ফ্লাইট। নববিবাহিত বচ্চন দম্পতির হানিমুন লন্ডনেই ঘটেছিল।