গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১টায় বিশ্বকাপ ফুটবলে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। এ সময় কলাপাড়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসে খেলা দেখছিলেন চিকিৎসক ডা. লেলিন খান ও অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ পার্থ সমদ্দার। ম্যাচের প্রথমার্ধ্বে ৪ গোল দেওয়ার পর হঠাৎ চিকিৎসকের কাছে খবর আসে প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছে ফাতেমা বেগম নামের এক গর্ভবতী নারী।
তাৎক্ষনিক রোগীকে নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। করা হয় সিজার। নবজাতকটি মায়ের পেট থেকে বের করেই চিকিৎসক লেলিন শিশুটির নাম রাখেন নেইমার। চিকিৎসক লেলিন অপারেশন থিয়েটারে শিশুটিকে কোলে নেওয়া কয়েকটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়। অনেকে কমেন্ট করে নবজাতকটিকে ব্রাজিলের জার্সি উপহার দেওয়ার কথাও জানান।
বর্তমানে মা এবং নবজাতক কলাপাড়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি আছেন। এদিকে শিশু নেইমারের ছোট চাচি অন্তরা বেগম বলেন, কলাপাড়া পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নজিবুল্লাহর স্ত্রী ফাতেমা বেগম। রাত ২টার দিকে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। এর পরপরই ফাতেমাকে ক্লিনিকে নিয়ে আসি। তাৎক্ষনিক চিকিৎসক লেলিন ফাতেমার সিজার করেন এবং শিশুটির নাম রাখেন নেইমার।
এ সময় ক্লিনিকের সেবিকা আলো বেগম জানান, ব্রাজিল ৪ গোল দেওয়ার পর আমরা অনেকটা উচ্ছসিত ছিলাম। রোগীকে ক্লিনিকে নিয়ে আসা হলে আমরা খেলা দেখা বাদ দিয়ে তাকে অপারেশন থিয়েটরে নিয়ে যাই। নবজাতকটিকে মায়ের পেট থেকে বের করা হলে চিকিৎসক ওর নাম রাখেন নেইমার।
এ বিষয়ে কলাপাড়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিকেল অফিসার ডা. লেলিন বলেন, ‘আমরা ক্লিনিকের সবাই এক সঙ্গে বসে ব্রাজিলের জার্সি পরে খেলা উপভোগ করছিলাম। ৪ গোল হওয়ায় খেলাটি বেশ জমে উঠছিলো। এ সময় ওই রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে খেলার বিরতিতে তাৎক্ষনিক তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে সিজার করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মজার বিষয় হচ্ছে নবজাতকটিকে আমি যখন হাতে নেই তখন মায়ের নারী কাটার আগেই সে আমার হাতে থাকা কাঁচি ধরে ফেলে। সে কাঁচি অনেকক্ষণ ধরে রাখে। এতে আমার সঙ্গে থাকা সবাই আরো বেশি উচ্ছাসিত হয়ে ওঠে। একদিকে ব্রাজিলের জয়ের আনন্দ এবং অন্যদিকে নবজাতকের জন্ম দুই আনন্দে আমি ওর নাম নেইমার রাখি।’