বর্তমানে এশিয়ার তথা গোটা বিশ্বের প্রথম সারির ধনকুবেরের তালিকার মধ্যে রয়েছেন মুকেশ আম্বানি। বাবা ধীরুভাই আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের দায়-দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। তার নেতৃত্বে রিলায়েন্সের এখন সারা বিশ্বজুড়ে রমরমা ব্যবসা চলছে। প্রত্যেক মুহুর্ত কঠোর পরিশ্রম করে তিনি আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। আজও কিন্তু তার পরিশ্রম শেষ হয়নি। বিলাসবহুল জীবন থাকা সত্ত্বেও ছকে বাঁধা জীবন কাটিয়ে যাচ্ছেন মুকেশ আম্বানি।
যোগব্যায়াম, কাজ, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো থেকে শুরু করে খাওয়া, ঘুম, সবই নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী নিয়ম মেনে করেন তিনি। তার রোজনামচায় কোনও কিছু এক চুলও এদিক থেকে ওদিক হয়না। অনেকেই বলেন তার সাফল্যের বীজ মন্ত্র নাকি লুকিয়ে রয়েছে তার এই ডেলি রুটিনের মধ্যেই! ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে সারাদিন কী কী কাজ করেন মুকেশ আম্বানি? দেখে নিন এক নজরে।
ভোর ৫ টায় ঘুম থেকে ওঠেন : মুকেশ আম্বানির দিনের শুরুটা হয় ভোর ৫টার সময়। তার বাড়ি অ্যান্টিলিয়া থেকে মুম্বাইয়ের সমুদ্র সৈকতের মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতেই নাকি দিনের শুরুটা করেন তিনি। এরপর যোগব্যায়াম করেন নিয়ম মেনে। তারপর স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট করেন। দিনের শুরুটা তাড়াতাড়ি হওয়াতে অনেকটা সময় তিনি নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে দেওয়ার জন্য পেয়ে যান।
ধ্যান : দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় জুড়ে ধ্যান কিংবা মেডিটেশন করা জরুরি। মুকেশ আম্বানি সে কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। এত বড় একটা ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মনোসংযোগ থাকা জরুরি। ধ্যানই কেবল মনের একাগ্রতা বাড়াতে পারে। আম্বানি তাই প্রতিদিন নিয়ম মেনে ধ্যান করেন।
জিম : শরীরচর্চার প্রতি তার বেশ মনোযোগ রয়েছে। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার গুরুত্ব তিনি বোঝেন। তাই শরীরের যত্ন নিতে তিনি প্রতিদিন জিমে গিয়ে কসরত করেন। শরীর এবং মন ভালো রাখার জন্য সবকিছুই করেন তিনি।
পরিবারের সঙ্গে বসে প্রাতঃরাশ করেন : দিনের শুরুতেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একই খাবার টেবিলে বসে প্রাতঃরাশ করেন মুকেশ আম্বানি। এভাবে কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও দিনের কিছুটা সময় পরিবারের সঙ্গে কাটানো যায়।
পড়াশোনা : দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় পড়াশোনার জন্য তুলে রেখেছেন মুকেশ আম্বানি। সামাজিক এবং বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে সবসময় আপ টু ডেট থাকতে হয় তাকে। তার জন্য তিনি নিয়ম করে প্রতিদিন রীতিমতো পড়াশোনা করেন।
নির্দিষ্ট সময়ে অফিস যান : ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেন মুকেশ আম্বানি। কাজে যাতে একচুলও এদিক-ওদিক না হয় তার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকেন তিনি। লিফটে করে বাড়ির তৃতীয় তলায় আসেন তিনি। এখানেই রয়েছে পার্কিং লট। এখানে তার পছন্দের ২০০ টিরও বেশি দামি ব্র্যান্ডেড গাড়ি এবং বাইক রয়েছে। তবে তিনি সাধারণত মার্সিডিজ মেব্যাক ৬২ গাড়িতে চড়ে সব জায়গাতে যাতায়াত করেন। প্রত্যেক দিন সকাল ১১টার মধ্যে তার অফিসে ঢোকার চাইই চাই।
সময়সূচী : মুকেশ আম্বানি সবসময় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করেন। একদিনে সব কাজ করে ফেলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। অফিসে পৌঁছানোর পরই তিনি দিনের সময়সূচী জেনে নেন তার নির্বাহী সহকারির থেকে। সেইমতো কাজগুলি আগে সেরে ফেলেন।
লাঞ্চ : প্রয়োজনীয় মিটিং এবং ব্যবসায়িক আলোচনা সেরে নেওয়ার পর তিনি আবার ফিরে যান তার বাড়িতে। ১ ঘন্টার জন্য লাঞ্চ ব্রেক থাকে তার। এই সময় তিনি তার পরিবারের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর সুযোগ পান। এতে কর্মব্যস্ততার মাঝে কিছুক্ষণ বিরতি পান তিনি। সঙ্গে তার কর্মদক্ষতারও বৃদ্ধি হয়।
সহকর্মীদের অনুপ্রেরণা জোগান : মুকেশ আম্বানি তার সহকর্মীদের মধ্যে স্বপ্ন দেখার সাহস জোগান। একই সঙ্গে সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য উৎসাহ প্রদান করে থাকেন। তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যান : দিনে যেমন খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠেন, তেমনি রাতেও খুব তাড়াতাড়িই ঘুমোতে যান মুকেশ আম্বানি। প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করেন তিনি। এতে তার শরীরে এনার্জি লেভেল থাকে ভরপুর।