বলিউডের (Bollywood) ঝাঁ-চকচকে বাইরেটা দেখলে অনেকেই এই ইন্ডাস্ট্রির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। অনেকেই তারকাদের গ্ল্যামারাস জীবন দেখে এই ইন্ডাস্ট্রির ছত্রছায়ায় জায়গা পাওয়ার জন্য নিজেদের সর্বস্ব ত্যাগ করেন। তবে প্রদীপের তলায় যেমন অন্ধকার থাকে, বলিউডের ভেতরেও তেমন রয়েছে নিকষ কালো অন্ধকার। বহু উঠতি তারকাই এই অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছেন।
বলিউডে কাস্টিং কাউচ (Casting Couch), শ্রেণী বৈষম্য (Discrimination), নেপোটিজম (Nepotism) থেকে শুরু করে রেসিজম (Racism), নতুন কোনও ঘটনা নয়। বলিউডের এই কদর্য দিকের শিকার হয়েছেন অনেকেই। একটা সময় নায়ক-নায়িকারা বলিউডের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেতেন না। তবে একবিংশ শতাব্দীর নায়িকারা বলিউডের কদর্যতা গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন। আজ এই প্রতিবেদনে জেনে নিন সেই নায়িকাদের নজরে বলিউডের চেহারাটা ঠিক কেমন?
নার্গিস ফাখরি (Nargis Fakhri) : কাস্টিং কাউচ বলিউডের অতি পুরাতন সমস্যা। এই সমস্যার শিকার হতে হয় নামিদামি সুন্দরীদের। বলিউডের এই কদর্যতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের নায়িকা নার্গিস ফাখরি। পরিচালকের শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার প্রস্তাব গিয়েছিল তার কাছে। সেই প্রস্তাব মেনে নিলে আজ হয়তো বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রী হিসেবে দেখা যেত তাকে। তবে নার্গিস তেমনটা চাননি। তার কথায়, “খ্যাতির খিদে নেই আমার। তার জন্য নগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো বা পরিচালকের শয্যাসঙ্গিনী হতে আমি রাজি নই। সে কারণে বিভিন্ন সময়ে একাধিক কাজ হারিয়েছি।”
তাপসী পান্নু (Tapsee Pannu) : তাপসী একবার একটি বলিউডের শ্রেণী বৈষম্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছিলেন। একবার নয়, একাধিকবার তাকে শ্রেণীবৈষম্যের মুখে পড়তে হয়েছিল। একবার তিনি খোলা চিঠিতে লেখেন, ‘একাধিক বার আচমকা আমার পারিশ্রমিক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ প্রযোজকের কোনও কারণে লোকসান হয়েছে। সামান্য টাকা পেতেও লড়াই করতে হয়েছে। অথবা হয়তো আমার সঙ্গে ছবির সব কথা পাকা হয়ে গিয়েছে। শ্যুটিংয়ের তারিখ পর্যন্ত ঠিক। হঠাৎ সব চুপচাপ। তার পরে খবর পেয়েছি, বড় কোনও অভিনেত্রী সেই চরিত্রে আসছেন। প্রথম সারির অভিনেত্রী নই বলে নায়ক আমার সঙ্গে কাজ করতে রাজি হননি। এমনটা বলিউডে আকছার হয়ে আসছে।’
কঙ্গনা রানাওয়াত (Kangana Ranaut) : বলিউডের সঙ্গে কঙ্গনার লড়াই চলে প্রকাশ্যে। নেপোটিজম, কাস্টিং কাউচ প্রসঙ্গে একাধিকবার মুখ খুলেছেন কঙ্গনা। বলিউডের তাবড় তাবড় তারকা অভিনেতা এবং পরিচালকদের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে রুখে দাঁড়িয়েছেন তিনি। বলিউড কুইন করিনা কাপুরের সঙ্গে একবার এক আলাপচারিতায় বলেন, ‘‘অভিনেত্রীদের কাজটা যতটা না কায়িক পরিশ্রমের, তার চেয়ে অনেক বেশি লড়াই করতে হয় মানসিক ভাবে। অনুভূতিগুলো একেবারে ওলটপালট হয়ে গিয়ে নায়িকা এক জন অন্য মানুষ হয়ে ওঠে।’’
রিচা চাড্ডা (Richa Chadda) : রিচা চাড্ডাও বলিউডে তার নিজস্ব খারাপ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছিলেন। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে একবার তিনি লিখেছিলেন, ‘এখানে এমন অনেক কিছু করতে বলা হয়, যা শারীরিক বা মানসিক স্বাস্থ্য ও কেরিয়ার – সবের জন্যই খারাপ। এবং বিশ্বাস করতে বাধ্য করানো হবে যে সেসব কাজ করা বলিউড কেরিয়ারের জন্যই ভালো।’