বাংলায় কৈ মাছের প্রাণ বলে একটা কথা আছে। কিন্তু স্যালামান্ডার বা লাঙফিশের কথা শুনলে কৈ মাছও লজ্জা পাবে। স্বাদুপানির এই মাছটি মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছরও ডাঙায় বেঁচে থাকতে পারে। এমনকি কিছু প্রজাতির লাঙফিশ বাতাসে শ্বাস নিতে এতটাই অভ্যস্ত যে বয়স বাড়ার সঙ্গে ফুলকার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে।
নাম যেমন লাঙফিশ তেমনই এই মাছের শ্বসনতন্ত্রও বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। মাছটির শ্বসনতন্ত্র অভিযোজিত হয়ে অন্যান্য স্থলপ্রাণীর মতোই সরাসরি বাতাস থেকে অক্সিজেন নিতে সাহায্য করে।
এমনকি কিছু প্রজাতির লাঙফিশ বাতাসে শ্বাস নিতে এতটাই অভ্যস্ত যে বয়স বাড়ার সঙ্গে ফুলকার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। পানিতে থাকলেও নিয়মিত ওপরে এসে তাদের শ্বাস নিতে হয়। এমনকি দীর্ঘসময় পানির নিচে থাকলে তারা ডুবেও যেতে পারে!
স্যালামান্ডারের দেহ ঈল মাছের মতোই লম্বাটে হয়ে থাকে। সুতার মতো বক্ষ ও শ্রোণি পাখনা দিয়ে সাঁতার কাটার পাশাপাশি হামাগুড়িও দিতে পারে তারা। সাধারণত অগভীর পানি ও জলাশয়ে বাস করলেও বড় হ্রদেও এদের দেখা মিলে।
পানিতে সালামান্ডার অন্য সব মাছের মতোই আচরণ করে। তারা পানিতে সাঁতার কাটে, ছোট মাছ ও পুকুরের তলদেশের ক্রাস্টেসিয়ান বা খোলকযুক্ত জলজ পানি খেতে থাকে।
তবে শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে এলে মাছটি কাঁদার গভীরে ঢুকে পড়ে। মুখ দিয়ে কাঁদা নিয়ে ফুলকার পাশ দিয়ে বের করে দিতে দিতে তারা কাঁদায় পথ তৈরি করে নেয়।
পছন্দমতো গভীরতায় পৌঁছে মাছটি খোড়াখুড়ি বন্ধ করে দেয়। তখন এদের ত্বক থেকে এক ধরণের শ্মেষ্মা নিঃসৃত হয় যা দেহের চারপাশে কোকুনের মতো শক্ত প্রতিরক্ষা খোলক তৈরি করে। শ্বাস নেওয়ার জন্য শুধুমাত্র মুখের অংশটি খোলা থাকে।
দীর্ঘ হাইবারনেশনের জন্য দেহের মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া কমিয়ে আনে স্যালামান্ডার। পানি ফিরে এসে কাঁদা নরম হতে শুরু করলে মাছটি গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে। কিছু কিছু গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে শুকনো কাঁদার নিচে স্যালামান্ডার চার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় স্যালামান্ডার পাওয়া যায়। আফ্রিকাতে স্থানীয়রা মাছটি খেয়ে থাকে। প্রায়ই তারা মাটি খুঁড়ে কাঁদার গভীর থেকে মাছ শিকার করে। বলা হয় স্যালামান্ডার বেশ কড়া স্বাদের একটি মাছ যা খেয়ে কমবেশি সবাই পছন্দ করে।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.