স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সাতটি গাভী দিয়ে খামার গড়ে তোলেন রিপন খান। বর্তমানে তার খামারে গাভীর সংখ্যা ৬০টি। এসব গাভী থেকে প্রতিদিন ৩০০ লিটার দুধ পান তিনি। দুধ বিক্রি করে মাসে তার আয় প্রায় ছয় লাখ টাকা। খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি তার খামারে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সফল খামারি রিপন খান পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ১নং ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়ন উত্তর শিয়ালকাঠি গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ফ্রিজিয়ান, জার্সি, শাহিওয়াল, সিন্ধি ও মুন্ডুুসহ বিভিন্ন জাতের সাতটি বিদেশি গাভী কিনে আনোয়ারা ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলেন তিনি। স্নাতক পাস করে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে আনোয়ারা ডেইরি ফার্ম গড়েন রিপন।
এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তার খামারে বিভিন্ন জাতের ৬০টি গাভী রয়েছে। তার খামারে শ্রমিকের সংখ্যা সাতজন। শ্রমিকদের বেতন আর গাভীগুলোর নিয়মিত খাদ্যদ্রব্যের খরচ বাদ দিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো আয় হয় রিপনের।
শিয়ালকাঠি গ্রামের বৃদ্ধ আ. বারেক বলেন, কৃষিকাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে দেশি গরু দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশি গরুর দুধ, চাষাবাদ এবং অন্যান্য উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। এ অবস্থায় কয়েকটি বিদেশি গাভী দিয়ে ফার্ম গড়ে রিপন। এখন তার খামারে অনেক গরু। প্রচুর দুধ পায় রিপন। তার গরুর দুধে আমাদের এলাকার চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকায়ও যায়।
এ বিষয়ে খামারি রিপন খান বলেন, সাতটি গাভী দিয়ে খামারটি গড়ে তুলি। বর্তমানে খামারে ৬০টি গাভী রয়েছে। প্রতিদিন ৩০০ লিটার দুধ পাই। প্রতি লিটার দুধ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। সে হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার টাকার দুধ বিক্রি হয়। বলতে পারেন মাসে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকার দুধ বিক্রি হয়।
গাভীর খাবার, বিভিন্ন জিনিসপত্র, ওষুধ এবং শ্রমিকদের বেতন দিয়ে মাসে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো লাভ থাকে। তিনি আরও বলেন, ছোট পরিসরে শুরু করলেও এখন খামারটি বড় করা জরুরি। কারণ ৬০টি গাভী এখানে রাখা কষ্টকর। তাই খামারটি বড় করার চেষ্টা চলছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খামারটি আরও সমৃদ্ধ করতে পারতাম।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিয়ালকাঠি গ্রামে বড় একটি গাভীর খামার আছে বলে আমরা জেনেছি। আশপাশের এলাকায় ওই খামার থেকে দুধ সরবরাহ করা হয়। খামারটি গড়ে মালিক স্বাবলম্বী হয়েছেন। এটি যুবসমাজের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।
বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য এটি অনুকরণীয়। খামারে নিত্যনতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে ব্যবসার উন্নতি করা যায়। শিক্ষিত যুবকরা এসব কাজে এগিয়ে এলে দেশের কৃষি ব্যবস্থাপনা আরও সমৃদ্ধ হবে। আমাদের পক্ষ থেকে খামারিদের সার্বিক সহায়তা দেয়া হবে।