পুকুরের পাড়ে বিভিন্ন ধরনের ফসল, ফল, গাছ-গাছরা রোপণের সুযোগ থাকলেও সেখানে সারাবছর নানারকমের মৌসুমী শাক-সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। তাতে জমির সদ্ব্যবহার, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। আর পুষ্টির যোগানের বিষয়টি তো রয়েছেই।আগেই বলেছি বিশ্বে স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ যেমন চতুর্থ ঠিক তেমনি শাক-সবজি উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয়। তাছাড়া আরেকটি পরিসংখ্যান
আমার আজকের এ প্রবন্ধের সাথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর সেটি হচ্ছে শাক-সবজি আবাদের জমির পরিমাণ বৃদ্ধি সংক্রান্ত। অর্থাৎ বিশ্বে শাক-সবজির জমির পরিমাণ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ প্রথম। কাজেই পুকুরে মাছ চাষ এবং তার পাড়ে সবজি চাষের জায়গা বানানো সেই উদ্যোগেরই একটি অংশ।
পুকুরের পাড়ে আসলে সারাবছরই কিছু না কিছু শাক-সবজির আবাদ করা সম্ভব। তারমধ্যে কিছু থাকতে পারে স্থায়ী এবং কিছু হতে পারে মৌসুমী। সাংবাৎসরিক বা স্থায়ীগুলোর মধ্যে আনাজি কাঁচ কলা, কাঁচা পেপে ইত্যাদি। অপরদিকে মৌসুমীগুলোর মধ্যে লাউ, সীম, পটল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, শশা, করলা, লালশাক, ডাটা, ঢেঁড়শ, টমেটো, মিষ্টিকুমড়া, চাল কুমড়া, কলমিশাক, পুঁইশাক, মিষ্টিআলু শাক ইত্যাদি। মসলার মধ্যে আদা, হলুদ, রসুন, পেঁয়াজ, ধনিয়া পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি। ডালের মধ্যে রয়েছে খেসারি, মাসকলাই, মটর ইত্যাদি। এসব শাক-সবজি কিংবা ডাল-মসলার সবগুলোই আবার শাক-সবজি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
মাগুর বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত মাছগুলোর মধ্যে একটি যার মূল প্রাপ্তিস্থান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।এর স্থানীয় নাম মজগুর, মচকুর বা মাগুর। আন্তর্জাতিকভাবে এটি ওয়াকিং ক্যাটফিস নামে পরিচিত। এই নামের কারণ হলো এটি শুষ্ক মাটির উপর দিয়ে প্রতিকূল পরিবেশ বা খাদ্য সংগ্রহের জন্য হেঁটে যেতে পারে। এই বিশেষ হাঁটার জন্য মাগুর মাছের বুকের কাছে পাখনা থাকে যা ব্যবহার করে এটি সাপের মত চলাচল করতে পারে। এই মাছের অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র আছে যার মাধ্যমে এটি বাতাস থেকে শ্বাস নিতে পারে।
মাগুর মাছ সাধারণত ৩০ সে.মি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৪৭ সে.মি হতে পারে। মাছের গায়ে কোন আঁশ থাকেনা। এরা অস্থিময়, মাথা অবনত এবং দুটি খাঁজ বিদ্যমান৷ পিঠের পাখনা লম্বা এবং চার জোড়া শুড় আছে৷ মাথা চ্যাপ্টা, মুখ প্রশস্ত, গায়ের রং লালচে বাদামী বা ধূসর কালো রংয়ের। কোন কোন ক্ষেত্রে পরিপক্ব স্ত্রী মাছের গায়ের রং ধূসর এবং পুরুষ মাছগুলির গায়ে হালকা বলয় থাকে। স্ত্রী মাছে কোন বলয় থাকে না। মাছের পৃষ্টদেশে ও পায়ুতে বড় বড় পাখনা থাকে। এই মাছ সর্বোচ্চ ১.১ঌ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
মাগুর মাছ বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোচীন, ফিলিপাইন, হংকং, দক্ষিণ চীন এবং ইন্দোনেশিয়াতে পাওয়া যায়।[২] এটি মূলতঃ গ্রীষ্মমন্ডলীয় মাছ এবং পানির তাপমাত্রা ১০-২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা। মাছ সাধারণত পানির তলদেশে খাল, বিল, নদী-নালা, হাওড়-বাওড়, ধান ক্ষেতের কর্দমাক্ত পানি এমনকি উপকূলীয় এলাকায় ঈষৎ লোনা পানিতে স্বাভাবিকভাবে বিচরণ করে।