বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজারে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর ভালো দাম থাকায় খুশি কৃষকরা। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের চাষিরা গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। টমেটো শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমানে কৃষি গবেষণার ফলে গ্রীষ্মকালেও এর চাষ করা যায়। আর অসময়ে চাষ হওয়া এই টমেটোর বাজারদরও ভালো। ফলে কৃষকরা লাভবান হতে পেরে খুশি। চলতি মৌসুমে এ ইউনিয়নে ৬০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে।
বিগত ৪-৫ বছর যাবত এই জেলায় গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হচ্ছে। তালা উপজেলায় ৭৫ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হয়েছে। বছরের এপ্রিল মাস থেকে এই টমেটোর চাষ শুরু হয়। ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ফল ধরে পাকতে শুরু করে। তারপর শীতকালীন টমেটোর চাষ শুরু হয়। নভেম্বর পর্যন্ত এই টমেটো বাজারে পাওয়া যায়।
কৃষক রবি সরদার বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করেছি। এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন বেশি হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকায় আশা করছি মৌসুম শেষে প্রতি বিঘায় কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে। এখন টমেটো বিক্রি করছি।
আরেক চাষি আসাদুর রহমান বলেন, চলতি বছর ১ বিঘা জমিতে গীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করেছি। এই টমেটো চাষ করতে বিঘায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। জমিতে যা টমেটো আছে তা দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবো। ইতোমধ্যে খরচের টাকা পরিমান টমেটো বিক্রি করেছি।
চাষি হাবিদুর রহমান বলেন, আমি জমি থেকেই পাইকারদের কাছে ৬৫-৭০ টাকা দরে টমেটো বিক্রি করেছি। যা বাজারে খুচরা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও কয়েকজন কৃষক জানান, নগরঘাটা এলাকায় মূলত বারি-৮ ও বারি-৪ জাতের টমেটোর আবাদ হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। খরচ বাদ বিঘা প্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ থাকে। চাষিরা বিঘা প্রতি প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারেন।
কৃষি কর্মকর্তা তুষার দাস বলেন, প্রথম বছর জমিতে গ্রীষ্মকলীন টমেটো চাষ করতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ হয়। পরবর্তিতে আর এতো টাকা ব্যয় হয় না। এই টমেটো চাষে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে ছাউনি ও বেড় তৈরি করতে হয়। বাজারদর ভালো থাকায় চাষিরা এই টমেটো চাষ করে লাভবান হতে পারেন। যা শীতকালে লাগে না।
কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, অনেকেই এই টমেটোর চাষের ব্যাপারে কিছু জানতে না। এই টমেটোর ফলন ও বাজারদর ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে টমেটো চাষের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের সহজ চাষ পদ্ধতি জানিয়েছেন।