ফাইনালে টাইব্রেকারের ফ্রান্সকে হারিয়ে মেসির হাতে উঠেছে এবারের বিশ্বকাপ। শ্বাসরুদ্ধকর এই ম্যাচে প্রিয় দল, প্রিয় খেলোয়াড়ের হাতে বিশ্বকাপ দেখে আনন্দে আত্মহারা ঢাকাই ছবির নায়িকা পরীমনি। জয়ের এক দিন পার হতে চলল, এখনো যেন তাঁর ঘোরই কাটছে না।
জয়ের আনন্দের মাঝেও কণ্ঠে যেন তাঁর এখনো খানিকটা আতঙ্ক ভর করে আছে। পরীমনি বলেন, ‘বিশ্বাস করেন, এখনো আমি ঘোরের মধ্যে আছি। মনে হচ্ছে এখনো খেলা চলছে। খেলার ফলাফল এই বুঝি কী হয়ে যায়। ঘোরই কাটছে না। আমার বয়সে এমন শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ আগে দেখিনি। খেলা চলাকালে প্রতিটি মুহূর্ত আমাকে আতঙ্কিত করেছে।’
দল আর্জেন্টিনা, খেলোয়াড় মেসির পাঁড় সমর্থক ঢালিউডের এ নায়িকা। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই মেসিকে নিয়ে তাঁর উন্মাদনার ছবি, ভিডিও তাঁর ফেসবুক পেজে প্রকাশ করে আসছিলেন পরীমনি। কিন্তু ফাইনাল খেলায় প্রতিপক্ষ দল ফ্রান্স, খেলোয়াড় এমবাপ্পেকে নিয়ে কিছুটা টেনশনেই ছিলেন তিনি। তাই টেলিভিশন বন্ধ করে খেলা না দেখার চিন্তা করেছিলেন। খেলা শুরুর পর কিছু সময়ের জন্য টেলিভিশন বন্ধও করে রেখেছিলেন তিনি।
পরীমনি বলেন, ‘ফলাফল কী হবে, এ নিয়ে গতকাল সারা দিনই আমার মধ্যে টেনশন কাজ করছিল। টেনশন কমাতে খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পরই আমি শুয়ে পড়ি। রাজ খেলা দেখছিল। যখন মেসিরা দুই গোল দিয়ে দেয়, তখন রাজ আমাকে খবরটি জানায়। আমি চিৎকার দিয়ে আবার খেলা দেখতে বসি।’
এরপর অঘটন শুরু হয়। খেলার শেষ পর্যায়ে গিয়ে ফ্রান্স গোল পরিশোধ করে দিলে পরীমনি আবার টেনশনে পড়ে যান।
তিনি বলেন, ‘যখন গোল পরিশোধ হয়ে যায়, আমার হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। আমি আর টেলিভিশনের সামনে থাকতে পারিনি। ওই সময় আমার যা অবস্থা হয়েছিল, আর্জেন্টিনা হেরে গেলে আমাকে নির্ঘাত হাসপাতালে নিতে হতো রাজকে। ওই সময় আমি পাগলের মতো বারবার বলছিলাম “মেসি তুমি কিছু একটা করো, কিছু একটা করো।”’
রাজ ব্রাজিলের সমর্থক। তবে ব্রাজিল হারার পর থেকে আর্জেন্টিনার পক্ষে পরীকে দারুণভাবে সমর্থন করে গেছে সে। পরীমনি বলেন, ‘দুই দলের যখন গোল সমতায় আসে, রাজ বারবার আমাকে আশ্বাস দিচ্ছিল, আর্জেন্টিনা জিতবে। আর্জেন্টিনার পক্ষে রাজ আমার সঙ্গে বাজিও ধরতে চেয়েছিল, আমি ভয়ে ধরিনি। টাইব্রেকারের সময় আমার অবস্থা কী ছিল, নিজেও জানি না। ’
শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে জয় পায় আর্জেন্টিনা। কেঁদে ফেলেন পরীমনি। সেই মুহূর্তটি গোপনে ভিডিও ধারণ করেন তাঁর স্বামী শরীফুল রাজ। পরীমনি বলেন, ‘বিশ্বাস করেন, আমার কান্না থামাতে পারছিলাম না। কেঁদেই যাচ্ছিলাম। পরে দেখি সেই মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেছে রাজ। কেমনটা লাগে বলেন। আমি কাঁদছি, সে ভিডিও করছে, এটা কিছু হলো!’
এদিকে আগে থেকেই রাজ ও পরীমনির মধ্যে চুক্তি হয়েছিল ব্রাজিল জিতলে পরীমনিকে ইউরোপ ট্যুরে নেবেন রাজ। আর আর্জেন্টিনা জিতলে দুজন মিলে আর্জেন্টিনা যাবেন।
আর্জেন্টিনা তো জিতে গেছে, সেখানে যাওয়া হচ্ছে কি না, পরীমনি বলেন, ‘অবশ্যই যাব। শিগগিরই সেই প্রস্তুতি নেব আমরা। মেসির দেশে আমাকে যেতেই হবে। যদি মেসি জানত, বাংলাদেশের একটি মেয়ে বাজিতে জিতে আর্জেন্টিনায় এসেছে, কী যে শান্তি লাগত!’