যেও না রে;প হয়ে যাবে, বলেছিল ওরা

কলকাতার ছোট পর্দায় ‘জামাই রাজা’ ধারাবাহিকের নীলাশা ওরফে শ্রীমা দর্শকদের কাছে পরিচিত মুখ।

কিন্ত বৃহস্পতিবার বিকালে কলকাতায় তাকে রীতিমতো হুমকি দেয়া হয়। সেই ঘটনার কথা নিজেই শেয়ার করলেন অভিনেত্রী। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

অভিনেত্রী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের লেখেন, বৃহস্পতিবার বিকাল। আমাকে এমন একটা ঘটনার মুখোমুখি দাঁড় করাল যে নতুন করে ভাবছি, কোন সমাজে আমরা বাস করছি?

আমি বাগবাজার উইমেন্স কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট। জার্নালিজম নিয়ে পড়াশোনা করছি। কিন্তু অভিনয়ে যুক্ত থাকার কারণে গত দুই বছর ধরে সেভাবে কলেজে যেতে পারিনি। গতকাল কলেজে গিয়েছিলাম। অনেক দিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ভেবেছিলাম সবাই মিলে আড্ডা দেব। তাই বাগবাজার ঘাটের কাছে আমাদের একটা প্রিয় জায়গায় বিকেলে গিয়েছিলাম আমরা কয়েকজন।

বাগবাজার মায়ের ঘাট থেকে একটু এগোলেই একটা নীল রঙের বাঁধানো জায়গা রয়েছে। ওখানে অনেকে বসে থাকে, ছবি তোলে। আমরাও ওখানে গিয়ে আড্ডা দেব প্ল্যান করেছিলাম। যখন ঢুকছি একদল ছেলে আমাদের বলল, যেও না, রে;প হয়ে যাবে। আমি উল্টো জিজ্ঞেস করলাম, কে রে;প করবে? ছেলেগুলো কিছু না বলে বেরিয়ে গেল। বন্ধুরাও বলল, ছাড়, চল। আমিও আর পাত্তা দিইনি।

তারপর ভেতরে ঢুকেছি। সেখানে তখন অনেকে বসে গল্প করছিল। কিন্তু আমাদের গ্রুপটা ছাড়া আর কোনও মেয়ে ছিল না। এক জায়গায় চার-পাঁচটা ছেলে বসেছিল। হঠাৎ তাদের মধ্যে থেকে একজন উঠে এসে বলে, এখানে মেয়েরা অ্যালাও নয়। তোমরা চলে যাও। আমরা জানতে চেয়েছিলাম, কোনও লিগ্যাল কিছু রয়েছে, যেখানে লেখা মেয়েরা অ্যালাও নয়? সেটা দেখাও, আমরা চলে যাব। ওরা তেমন কিছুই দেখাতে পারেনি। আমরা তো গিয়েছিলাম গল্প করতে। কোনও খারাপ কাজ তো করিনি!

আমি তখন নর্মাল ফেসবুক লাইভ করতে শুরু করি। বন্ধুদের সঙ্গে ফেসবুক ফ্রেন্ডদের আলাপ করাচ্ছিলাম। তখনই আবার আমাদের কাছে চলে আসে ওই ছেলেদের গ্রুপটা। জানতে চায়, তোমরা কোন কলেজের স্টুডেন্ট? আমরা উত্তর দেয়ার পর ওরা বলে, ওই কলেজের কোনও স্টুডেন্ট নাকি ওখানে আগে গিয়েছিল। তাকে রে;প করা হয়। তারপর সে আত্মহত্যা করে। সে সময়টা ফেসবুক লাইভ চলছে। সেই ভিডিওতে ওই ছেলেগুলোকে দেখিয়েছি আমি। ওদের মধ্যে একজন আমাকে চিনতেও পেরেছিল। আমি বলেছিলাম, আমি মিডিয়া থেকে এসেছি। ওরা বারবার চলে যাওয়ার জন্য জোর করতে থাকে।

আমার মনে হয়, ওরা ওখানে বসে নেশা করছিল। সে জন্যই অন্য কেউ ওখানে থাকুক, সেটা ওরা চায়নি। লাইভ চলতে চলতেই ওরা এসে জানতে চায়, আপনারা ভিডিও রেকর্ড করছেন? গোটা ঘটনায় আমি, আমার বন্ধুরা খুব অবাক হয়েছি। এটা কী ধরনের চিন্তাধারা? ওরা লোকাল ছেলে। ওখানে মেয়েদের সঙ্গে কেউ অসভ্যতা করলে কোথায় ওরা সেটার প্রতিবাদ করবে! তা নয়, ওরা নিজেরাই বলছে, যেও না, রে;প হয়ে যাবে?

আরও একটা কথা মনে হচ্ছে, অভিনয়ের সুবাদে আমার এখন কিছুটা পরিচিতি হয়েছে। সে কারণেই হয়তো আমার লাইভ এত মানুষ দেখেছেন বা এখানে লিখে আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারলাম। কিন্তু গত কাল বন্ধুদের সঙ্গে আমি না থাকলে, এই ঘটনাটা ক’জন জানতে পারতেন? প্রথমে কিন্তু নর্মাল লাইভ করছিলাম। পরে মনে হলো, সত্যিটা সবার জানা উচিত।

ফেসবুক লাইভ বন্ধ করার পর আরও ১০-১৫ মিনিট ওখানে ছিলাম। তারপর আমার কাজ ছিল। ফলে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। রাতে শো ছিল। আজ সকাল থেকে শুটিং চলছে। রাতে বাবাকে ঘটনাটা বলেছিলাম। তবে এখনও পর্যন্ত গোটা বিষয়টা নিয়ে আমি আইনের পথ নিইনি। কিন্তু চিন্তাভাবনা করছি। বিষয়টা ঠিক জায়গায় জানাব।