টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তরুণ সোহান খান। সতেরো বছর আগে শখের বসে পাখি পালন শুরু করেছিলেন। পাখি প্রেম থেকে করেছেন খামার। পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও পাখি নিয়ে নিয়মিত ব্লগিং করেন। যেখানে পাখি পালন, পাখির পরিচর্যার মতো নানা কন্টেন্ট তিনি তুলে ধরেন। শখের সেই পাখি পালনই এখন উপার্জনের পথ খুলে দিয়েছে। পাখির খামার থেকে প্রতিমাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন সোহান।
টাঙ্গাইল সদরের কান্দিলা গ্রামের মরহুম মাহবুবুর রহমান খানের ছেলে সোহান। ২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পর থেকে বেকার বসে ছিলেন তিনি। তখন তাকে একটি পাখির খামার করে দেন বড়বোন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সোহানকে। তার ফেসবুক ব্লগিং পেজ ‘বার্ডস ভ্যালি’ পাখিপ্রেমীদের কাছেও বেশ জনপ্রিয়।
সোহান খান জানান, ২০০৬ সালে শখের বসে বাবার হাত ধরে পাখি পালন শুরু করেন তিনি। ২০১৮ সালে ‘বার্ডস ভ্যালি’ নামে খামার করেন। তখন থেকেই বড় পরিসরে পাখি পালন শুরু হয়। এসব অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে এবং মানুষকে পাখি পালনে উদ্বুদ্ধ করতে ২০২০ সাল থেকে সামাজিক মাধ্যমে ব্লগিং শুরু করেন। প্রতিদিন পাখি লালন পালনের ভিডিও ব্লগিংয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেন। যা দেখে পাখি পালনে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন অনেক মানুষ।
বর্তমানে সোহানের খামারে বিভিন্ন প্রজাতির ১০০ জোড়ার বেশি পাখি রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে, ককাটেল, কনুর, লরি, লাভ বার্ড, গ্রিন ফিঞ্চ, ইয়েলো ফিঞ্চ, ব্লু ফিঞ্চ, ভায়োলেট ফিঞ্চ, হোয়াইট ফিঞ্চ।
সোহান বলেন, শখের বশে পাখি পালন শুরু করি। এখন খামারও করেছি। মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করি। পাখিপ্রেমীদের কাছে আমার ‘বার্ডস ভ্যালি’ একটি সুপরিচিত নাম। এর মাধ্যমে আয়ের পাশাপাশি নিজের পরিচিতিও বেড়েছে। এই বিষয়টি খুবই ভালো লাগছে আমার।
সোহান আরও বলেন, ‘বার্ডস ভ্যালি’ ব্লগিংয়ের মাধ্যমে যারা নতুন পাখি পোষা শুরু করেছেন তারা বেশ উপকৃত হচ্ছেন। ব্লগের ভিডিও দেখে কীভাবে পাখির যত্ন, লালন-পালন ও পাখির প্রজনন করাতে হয় তা জানতে পারছেন। অসুস্থ পাখির প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরিচর্যাও শিখতে পারছেন।
সোহানের বড়বোন শিমু খান বলেন, ২০১৮ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পর বেকার বসে ছিল সোহান। তখন পড়ালেখার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে নিজেদের বাসায় একটি পাখির খামার করে দেই। প্রাথমিক অবস্থায় কিছু পাখিও কিনে দেয়া হয়। তারপর ধীরে ধীরে সেটাকে বড় করে আজকে ওর অবস্থান ভালো। আজকে ও সফল, দেখেও ভালো লাগে।
ছেলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত সোহানের মা পারভীন সুলতানা। বলেন, ওর বাবার হাত ধরে শখের বশে পাখি পালা শুরু করেছিলো। পরে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করে। ওর বড়বোন টাকা দেয়, আর আমি সে টাকা দিয়ে বাড়ির সামনে দুই শতাংশ জমির ওপর খামার তৈরি করে দেই। এখন ওর অনেক পাখি রয়েছে। ফেসবুকেও ব্লগিং করে। ব্লগ দেখে অন্যরাও পাখি পালনে উৎসাহী হচ্ছে।