দীপিকা পাডুকোন বা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো হয়তো সবাই এক নামে তাকে চেনেন না। তবে দক্ষিণী ফিল্মে আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন নিশা নূর। ‘কল্যানা আগাথিগাল’, ‘লায়ার দ্য গ্রেট’, ‘টিক! টিক! টিক!’-এর মতো প্রচুর হিট ফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি। মূলত তামিল এবং মালায়লম ফিল্মই তিনি করতেন।
এমন হিট নায়িকার জীবন কিন্তু ছিল হতাশায় ভরা। শেষ জীবনে অর্থকষ্টে রাস্তায় কাটাতে হয়েছে তাকে। গায়ে পোকা, মাছি বসে থাকত। শেষে এইডস-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। নিশা নূরের অভিনয়ের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ইন্ডাস্ট্রিতে। বালাচন্দন, বিষু, চন্দ্রশেখরের মতো এককালের নাম করা সব পরিচালকের সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন।
শোনা যায়, রজনীকান্ত এবং কামাল হাসান তার রূপে-গুণে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তার সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তারা। দক্ষিণী এই দুই সুপারস্টারের সঙ্গেও টেলিভিশন স্ক্রিনে রোম্যান্স করতে দেখা গেছে নিশা নূরকে। এ হেন জনপ্রিয়তাই তার ক্ষেত্রে কাল হয়ে গিয়েছিল।
খুব তাড়াতাড়ি তার কেরিয়ারের ‘দি এন্ড’ হয়ে যায়। ভীষণ অপ্রত্যাশিত ভাবেই আচমকা ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান তিনি। শোনা যায়, সে সময় নাকি এক নাম করা প্রডিউসারের খপ্পরে পড়ে গিয়েছিলেন নিশা নূর। ওই প্রডিউসার তার সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন। তাকে খারাপ পেশায় নামতে বাধ্য করেছিলেন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ইন্ডাস্ট্রি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কেউই তার সঙ্গে কাজ করতে চাইছিলেন না। বাধ্য হয়েই ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন নিশা নূর। কাজ হারিয়ে ক্রমে আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে পড়েন তিনি। দিনের পর দিন খেতে পেতেন না। এই সময়ে তার পাশে দাঁড়ানোরও কেউ ছিল না।
অনেক বছর পর ২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের একটি দরগার বাইরে রাস্তায় তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কঙ্কালসার চেহারা, মলিন পোশাক, গায়ে পোকা, মাছি ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তিনি এতটাই শীর্ণ ছিলেন যে মাছি তাড়ানোরও শক্তি ছিল না দেহে। দেখে বোঝার কোনো উপায়ই ছিল না যে তিনিই সেই নিশা নূর।
তাকে চিনতে পেরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। সেখানে চিকিৎসায় ধরা পড়ে নিশা এ’’ই’’চ’’আ’’ইভি ভা’’ই’’রা’’সে (এ’’ই’’ড’’স) আ’’ক্রা’’ন্ত। এই ভ’’য়া’’ন’’ক ব্যাধিতেই ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিল মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তার মৃ’’ত্যু হয়।