অজগর হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সাপ। অজগরকে ময়াল নামেও ডাকা হয়। এরা বিষহীন আদিম সাপ। এদের পিছনের পা-এর চিহ্ন পুরো বিলুপ্ত হয়নি।এরা শিকারকে জোরে পেঁচিয়ে এরা তার দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরা শীকারকে সাধারনত মাথার দিক থেকে আস্ত গিলে খাওয়া শুরু করে। কারণ, এতে শীকারের বাধা দেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। শীকার হজম করতে তাদের কয়েকদিন সময় লাগে। মৃত প্রাণী খায়না।
জৌনপুর সিটী থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে রুপপুর নামে এক গ্রামের কৃষি ক্ষেতের পাশে এক গর্তে দেখা দিয়েছে বিশালাকৃতির 1 অজগর সাপ। তা দেখে গ্রামের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে পড়ে যায়। পুরো গ্রামের মধ্যে হইচই পড়ে যায় । গ্রামবাসীরা প্রথমে একটি গর্তের মধ্যে কিছু একটা আছে বলে ধারণা করা। তারপর গর্তটি খোড়তেই বেরিয়ে এলো এই বিশাল আকৃতির অজগরটি।
প্রথমত তারা সকলেই আতঙ্কের মধ্যে পড়ে যায়। তারা প্রথমেই চাইলে সাপটিকে মেরে ফেলতে পারতো। কিন্তু তারা বুঝতে পারে এই সাপ আমাদের পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। যা আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তারপর তারা একটি বন্যপ্রাণীর উদ্ধারকারী বাহিনীকে খবর দেয়। খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারীরা প্রায় 40 কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এই গ্রামে ছোট চলে আসে সাপটিকে উদ্ধার করার জন্য।
উদ্ধারকারী বাহিনী এসে দেখতে পেলো সাপটি একটি গর্তের মধ্যে লুকিয়ে আছে। গ্রামবাসী গর্তটি খনন করে ফেলায় বৃহৎ আকৃতির এই সাপটি অর্ধেক গর্তের বাহিরে চলে আসে। তারপর উদ্ধারকারী বাহিনীর একজন সাপটিকে টেনে গর্ত থেকে বের করে। তা দেখতে গ্রামের উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায় মুহূর্তের মধ্যে। তিনি সাপটিকে উদ্ধার করার পর গ্রামের লোকজনকে এই সাপ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানিয়ে দিচ্ছে।
করোনাকালীন সময় হওয়ার কারণে উদ্ধারকারী বাহিনীর একজন ভিড় করা জনতার মধ্যে জীবাণুনাশক দিয়ে সকলের হাত পরিষ্কার করে দিচ্ছিলেন। এবং প্রত্যেকে একটি একটি করে মাস্ক দিচ্ছিলেন।কেননা গ্রামের এই উৎসুক জনতাকে চাইলে এখান থেকে সরানো যাবে না। কেননা এরকম সাপ ধরার ঘটনা গ্রামে হরহামেশা হয় না। যার কারণে এ ধরনের সাপ ধরার দেখার জন্য গ্রামের উৎসুক জনতা ভিড় করেছে। তাই তিনি সকলের সেফটির জন্য প্রত্যেকে একটি করে মাস্ক পড়িয়ে দিলেন।
তিনি সাপটিকে উদ্ধার করার পর রাস্তায় নিয়ে গ্রামের উৎসুক জনতাকে কিছুক্ষণ এই সাপটির খেলা দেখালেন। এবং এই সাপ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তাদেরকে জানিয়ে দিলেন। সবশেষে তিনি এই সাপটিকে একটি বস্তার মধ্যে ভরে নিয়ে গেলেন। তিনি সাপটিকে নিয়ে লোকালয়ের বাহিরে এক জঙ্গলের মধ্যে মুক্ত করে দিলেন। তিনি প্রায় বিশ বছর ধরে এই মহৎ কাজটি করে যাচ্ছেন।
আমাদের প্রত্যেকের উচিত বন্য প্রাণীদের কে বিনা দোষে না মেরে তাদেরকে এভাবে ধরে লোকালয়ের বাহিরে নিয়ে কোন জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া। কেননা এই বন্য প্রাণী গুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। শুধুমাত্র মানুষের কারণে পৃথিবী থেকে শতশত প্রাণী আজ বিলুপ্তির মুখে এবং অনেক প্রাণী রয়েছে যারা এর পূর্বেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমরা বন্যপ্রাণী নিধন করবো না এবং অন্যকে নিধন করতে দেবো না।