বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। শক্তিমান অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে প্রায় দুই দশক সময় লেগেছে। ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন নওয়াজউদ্দিন। যদিও তার এই জার্নিটা মসৃণ ছিল না। ফলে জীবনের ঝুলিতে জমা পড়েছে অপমান আর গ্লানির গল্প।
বর্তমানে ভারতের গোয়ায় চলছে ৫৪ তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সেখানে যোগ দিয়েছেন তিনি। এ অনুষ্ঠানে তার অভিনীত একাধিক চরিত্র ও বাস্তবে জীবনের কঠিন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি’, ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’, ‘বাদলাপুর’ প্রভৃতি সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছেন নওয়াজউদ্দিন। এর কারণ জানতে চাইলে এই অভিনেতা বলেন, ‘আলাদা চরিত্র একভাবে অভিনয় করা আর এক চরিত্র আলাদাভাবে অভিনয় করার মাঝে পার্থক্য আছে। আমার কাছে দ্বিতীয়টাই বেশি প্রাধান্য পায়। আমি অনুভব করেছিলাম ফয়জল খান বা রমন রাঘব ভীষণ আলাদা দুটো চরিত্র, তাদের চাহিদা আলাদা, দাবি আলাদা। ফলে দুটো চরিত্র একেবারেই আলাদা।’
মান্টো চরিত্রে অভিনয় করেছেন নওয়াজউদ্দিন। এ চরিত্রের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেছিলেন? এ প্রশ্নের উত্তরে এই অভিনেতা বলেন, ‘আমি নিচু জাতের। আমি যখন গ্রামে থাকতাম, তখন অনেক খোঁচা শুনেছি। একটা দীর্ঘ সময় এই বাঁকা কথাগুলোর সঙ্গে লড়াই করেছি, শেষ পর্যন্ত গ্রাম ছেড়ে চলে আসি। এরপর মুম্বাইতে যখন সেই মনোভাব, কষ্ট নিয়ে আসি, তখন এই চরিত্রটা পাই। সেই হীনমন্যতায় ভুগতে থাকার বিষয়টি এই চরিত্রের সঙ্গে যেন মিশে গিয়েছিল।’
‘মান্টো চরিত্রের মধ্য দিয়ে যেন অনেক কিছু বলতে চাওয়া হয়েছিল। মান্টোও তার প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চেয়েছিল, যা তাকে ফেলে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিল। মান্টোর গোটা জীবনটাই একটা চেষ্টা ছিল। ও নিজে না পারলেও সবটা ওর ছেলেদের দিতে চেয়েছিল। কোথাও গিয়ে এটা যেন আমার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।’ বলেন নওয়াজউদ্দিন।
নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী অভিনীত ‘মান্টো’ সিনেমা ২০১৮ সালে মুক্তি পায়। উর্দু লেখক সাদাত হোসেন মান্টোর জীবনের গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমাটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন এ অভিনেতা। এতে অভিনয়ের জন্য মাত্র ১ রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন নওয়াজ।