বাঙালির বিয়ের অনুষ্ঠানে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হবে না-এমনটা হতেই পারে না! স্থানভেদে বিয়ের বর কনেকে একদিন, তিনদিন কিংবা সাতদিন ধরে গায়ে হলুদ দেওয়ার চল আছে। কিন্তু কীভাবে এলো এই অনুষ্ঠান?
সনাতন বিয়ের রীতি অনুযায়ী, বিয়ের দিন সকালে হলুদ মেখে গোসল করেন বর-কনে। পুরাণেও হিন্দু বিয়ের রীতিতে হলুদের চল ছিল। প্রাকৃতিক এই মশলায় রয়েছে নানা গুণ। বিয়েতে হলুদ ব্যবহারের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি বিশেষ দিকের কথা বলে থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান বিয়ের রীতি অনেকটাই মোঘল যুগ থেকে চলে আসছে।
অতীতে নিয়ম ছিল সূচের ছোঁয়া নেই এমন পোশাক পরেই বিয়ে হবে। এই রীতিতে পরিবর্তন আনেন নূরজাহান। তিনি জরির সুতার বেনারসির চল শুরু করেন। তা দেখতে এতই সুন্দর ও আকর্ষক ছিল যে, বিয়ের পোশাক হিসাবে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষ এই পোশাক পরতে শুরু করে।
গায়ে হলুদ দেওয়ার চল কিন্তু বৈদিক আচার নয়। কাঁচা হলুদ প্রাকৃতিকভাবে জীবাণুনাশক। হলুদ ত্বকের সংক্রমণ দূর করে। শরীরে তাপের ভারসাম্য তৈরিতে সাহায্য করে। বিয়ের সময় বর-কনের শরীর ভালো রাখার জন্য, সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে হলুদ মাখানোর রীতি আছে। বর কনের গায়ে হলুদ মাখাকে কেন্দ্র করে বাড়ির ছোট-বড় সবাই মিলে উৎসবে মেতে ওঠে। আর এভাবেই ‘গায়ে হলুদ’ একটি অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। হলুদকে শুভ ও মঙ্গলকর বলেও মনে করা হয়। সেটাও এই হলুদ ব্যবহারের আর এক কারণ।
এছাড়া রূপচর্চায় প্রাকৃতিক উপাদানের অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে হলুদ। এতে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা যেকোন ত্বকের জন্যই উপকারি। মুখে হলুদ মাখলে চড়া মেকআপেও ত্বকের ক্ষতি হয় না।
এসব কারণে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান যুগ যুগ ধরে টিকে রয়েছে।