সাপ পুষছেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি। কিছু দিন আগে আইন মেনে একটি অজগর সাপ সৃজিত তার কলকাতার লেক গার্ডেন্সের বাসায় নিয়ে আসেন। বল পাইথন জাতের সাপটির নাম রেখেছেন ‘উলুপী’। আর সাপটির ঘর মাটি-বালি মিশিয়ে পরিচালক তার রেডরুমে তৈরি করে দিয়েছেন।
Google news
পাঁচ মাস বয়সী সাপটি সৃজিতের কোলে উঠে খেলা করে; বই পড়ার সময়ে পরিচালককে সঙ্গ দেয়। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান সৃজিত। সাপকে পোষ্য করে কেমন দিন কাটছে সৃজিতের? জবাবে পরিচালক বলেন, ‘খুবই মিষ্টি ব্যক্তিত্ব (উলুপীর)। কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকতে পছন্দ করে। সাতদিনে একবার খায়, বিকেলে একবার ঘুরতে বের হয়।’
সাপ পোষার ভাবনাটা কীভাবে মাথায় এলো? এ প্রশ্নের উত্তরে সৃজিত বলেন, ‘আমি বরাবরই সাপ ভালোবাসি। ছোটবেলায় সাপুড়ে এলে তাদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতাম। বিদেশের পেট শপে গিয়ে বল পাইথন বা কর্ন স্নেকের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বিদেশে সাপকে যেমন পোষ্য করা যায়, এই শহরেও তেমন হলে ভালো হয়, এরকম মনে হতো। সাপ এলিগেন্ট, মিসআন্ডারস্টুড।’
‘‘দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষা’— বাক্যটা এই উপমহাদেশে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সাপ বিশ্বাসঘাতক তা কুসংস্কার বলে মনে করি। বরং কিছু সাপ ভালো পোষ্য। বল পাইথন সেরকম একটা সাপ।’’ বলেন সৃজিত।
সাপের বিষ সাপের কাছেও মূল্যবান। তা উল্লেখ করে সৃজিত বলেন, ‘সব প্রাণীরই একটা এক্সট্রিম ম্যানিফেস্টেশন থাকে। যেমন কুকুরও কাউকে কামড়ে মাংস উপড়ে নিতে পারে। কিন্তু ডোবারম্যানের ব্যবহারের ধরন দিয়ে যেমন ল্যাবরাডর সম্পর্কে ধারণা করা উচিত নয়, তেমনই গোখরা বা কেউটের মতো বিষধর সাপের সঙ্গে বল পাইথনের তুলনা করা ভুল। সাপ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বললেও বোঝা যায়, বিষ সাপের কাছেও মূল্যবান। বিষধর সাপও আত্মরক্ষার প্রয়োজনেই সাধারণত সাপ বিষ ব্যবহার করে।’
মানুষের ভাবনার সঙ্গে প্রাণীর ভাবনা বিচারের পদ্ধতি ভুল বলে মনে করেন সৃজিত। তার মতে, ‘একজন মানুষ যেভাবে ভাবছেন, সেই ভাবনার নিরিখে অন্য প্রাণীর ভাবনা বিচার করার পদ্ধতিটা ভুল। উলুপী কী ভাবছে, সেটা আমরা কেউ জানি না। সে বলেনি, তার এই পরিবেশে থাকতে অসুবিধা হচ্ছে। এই বল পাইথনকে কোনো জঙ্গল থেকে তুলে আনা হয়নি। বহু প্রজন্ম ধরে বল পাইথন পোষ্য হিসেবে থাকতে অভ্যস্ত।
ওয়াইল্ড কট আর ক্যাপটিভ ব্রিডের মধ্যে ফারাক আছে। বল পাইথন ক্যাপটিভ ব্রিড। তবে হ্যাঁ, বিদেশ থেকে এমন পোষ্য আমদানি করা বেআইনি, শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রি করা দেশের ব্রিডার আর রিসেলারের কাছ থেকে কেনা যায়, যেমন উলুপী এসেছে কেরালা থেকে।’