সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কেবল দেশেই নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতেও মামলা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন তাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হবে। কেবল শেখ হাসিনাই নয়, মামলায় হুকুমের আসামি হবেন আরও অনেকেই।
তিনি আরও বলেন পুলিশের পদস্থ যেসব কর্মকর্তা গুলির নির্দেশ দিয়েছেন, যারা মাঠে থেকে নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন তারাও পার পাবে না। পরিবর্তন করা হবে পুলিশের লোগো এবং পোশাক। ভবিষ্যতে কোনো মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুলিশ কাজ করবে না। পুলিশ পরিচালনা করা হবে একটি কমিশনের মাধ্যমে।
শিগগিরই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে কমিশন গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া পুলিশের কাছ থেকে প্রত্যাহার করা হবে প্রাণঘাতী সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু। গতকাল ১২ আগস্ট বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার পক্ষে এখন ভারত ছাড়া আর কেউ নেই। তারা যদি বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব না দিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষেই অবস্থান ধরে রাখেন তাহলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী-জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্ট্রাকচার ভেঙে পড়েছে। এটা ঠিক করাই মূল চ্যালেঞ্জ।
আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলির বিষয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে এক বড় একটি ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এতে মানুষের মনে বাহিনী সম্পর্কে একটি ঘৃণা জন্মেছে। এতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা অনুতপ্ত। তারা আমাকে বলেছে, তাদের দিয়ে অপকর্ম করানো হয়েছে। নিজেরা এখন ঘৃণার পাত্র হয়ে গেছেন। এর দায় সিনিয়র অফিসার ও অন্যদের।
সাখাওয়াত হোসেন জানান তাই বর্তমান ইউনিফর্ম পরে ডিউটি করতে চাচ্ছে না। তারা এখনো ট্রমার মধ্যে আছে। আমি আমার ব্যক্তিগত ইমেজ দিয়ে আপাতত পুলিশের সমস্যার সমাধান করেছি। কিন্তু পুরো স্ট্রাকচারকে একটি পর্যায়ে আনতে একটু সময় লাগবে।
তিনি আরও জানান, বিডিআর বিদ্রোহে নিহত ৫৭ সেনা কর্মকর্তা এবং সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যার কোনো কূলকিনারা হয়নি। আমি এই দুটি ঘটনার শেষ দেখতে চাই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে বলেও তিনি আরও জানান। এছাড়া পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন আনসার সদস্যরাও।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি কোনো আরাম-আয়েশের জন্য উপদেষ্টা হইনি। যে যাই বলুক না কেন, আমি আমার কাজ করতে চাই। তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে চেয়ারে বসতেন সেই চেয়ার পরিবর্তন করে ফেলেছি। আমি একটি নরমাল চেয়ারে বসি। যে টেবিলটি রয়েছে সেটিও সরিয়ে ফেলব।