৪ অগাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটি ঘোষণার পর থেকেই এটিকে ‘স্বঘোষিত কমিটি’ হিসেবে দাবি করেছিল শিক্ষার্থীরা।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়টির শতাধিক শিক্ষার্থী নিজেদের ফেইসবুকে কমিটিকে ‘ফ্যাসিস্ট ও স্বার্থান্বেষী’ হিসেবে উল্লেখ তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার পোস্ট করেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত ৪ অগাস্ট সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আট সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের তখন থেকেই দাবি- এটি ‘স্বঘোষিত কমিটি’, যার সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনও সম্পৃক্ততা নেই।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল আহমেদ অয়ন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্যাম্পাসে একটি স্বঘোষিত সমন্বয়ক কমিটি দেখা গেলেও আন্দোলনের সময় কোনও সমন্বয়কের কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি।
“তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের বর্তমান কার্যক্রমকে ব্যক্তিস্বার্থ, নিজস্ব রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্যমূলক মনে করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ স্বার্থান্বেষী সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।”
বায়োটেকনোলজি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তাসনিম সাকিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সমন্বয়কদের নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছে, তখন তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার পরিবর্তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আলাদা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
“যেখানে তাদের আসল কাজই হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সমন্বয় করা। আর তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে যেটি করার চেষ্টা করছেন, সেই কাজটিই একধরনের বৈষম্য। যা এই সম্পূর্ণ আন্দোলনের আদর্শের পরিপন্থি।”
তিনি আরও বলেন, “প্রশ্ন আর ধোঁয়াশা রেখে কোনও গোষ্ঠী যদি নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে তাদের মতামতকে সর্বেসর্বা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে থাকে, তাহলে তাদের সচেতন শিক্ষার্থীরা বয়কট করবেই এবং হচ্ছেও তাই।”
ঘোষিত এই কমিটিতে থাকা ভেটেরিনারি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক মাহফুজা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, “সরকার পতনের কয়েকদিন আগে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপে সমন্বয়ক চেয়ে লিংক দেওয়া হয়।
“এর ভিত্তিতে আমি নাম দিই কিন্তু আন্দোলন শেষ হওয়ার পর সমন্বয়কদের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। পরে আমার অনেক বন্ধুবান্ধব আমাকে জানায়, এই তালিকার কয়েকজন বিভিন্ন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই গত ৭ অগাস্ট আমি পদত্যাগ করি।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির প্রধান সমন্বয়ক দাবি করা কৃষি অনুষদের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের আসলে বোঝা উচিত তারা কাদের কথায় বা প্ররোচনায় এমনটা করছে। সারাদেশের মতো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও যারা আওয়ামী স্বৈরাচারী ছিল তারাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেলতেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরাও এর পেছনে জড়িত। এসব স্বৈরাচাররা আবারও আমাদের আগের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞাকে চাচ্ছে। যেন আবারও ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য চালু হয় এবং আমাদের এই কমিটিকেও বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।
“আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহ্বান করবো, তারা যা-ই করুক যেন বুঝেশুনে করে। কারো কথায় প্ররোচিত হয়ে যেন কিছু না করে।”
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও সিলেটের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল-গালিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,”বিষয়টি জানা নেই, খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.