সারা দেশে পুলিশের কার্যক্রম প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এলেও খবর নেই আলোচিত ১৫ পুলিশ কর্মকর্তার। অন্তর্বর্তী সরকারের আলটিমেটাম শেষ হলেও কাজে যোগ দেননি তারা। কারও কক্ষের দরজায় ঝুলছে তালা। আবার কারও কক্ষ খোলা পাওয়া গেলেও চেয়ার-টেবিল নেই। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে-সেই পুলিশ কর্মকর্তারা এখন কোথায়? এ কর্মকর্তারা বাদেও বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া কজনের খোঁজ মিলছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর অনেকেই রয়েছেন আত্মগোপনে। এদের অধিকাংশই বিভিন্ন মামলার আসামি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘কারা কারা এখনো কাজে যোগ দেননি তার প্রকৃত হিসাব এ মুহূর্তে নেই। তবে বেশির ভাগই কাজে যোগ দিয়েছেন। কিছু কিছু আছেন যারা ছুটিতে, কেউ আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই যারা অনুপস্থিত তাদের কাছে অবশ্যই আমরা কৈফিয়ত তলব করব।’
কর্মস্থলে অনুপস্থিত এবং দায়িত্ব পালন না করা পুলিশ সদস্যদের ১৫ আগস্টের মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। কিন্তু তাঁর আলটিমেটাম শেষ হলেও ক্ষমতাচ্যুত সরকারঘেঁষা হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওই ১৫ কর্মকর্তা গতকাল পর্যন্ত কাজে যোগ দেননি বলে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে অনুপস্থিতরা আর ‘চাকরি করতে চাইছেন না’ বলে ধরে নেওয়া হবে। সে হিসেবে পরবর্তী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। ১৫ আগস্টের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না পুলিশের। ডিএমপিসূত্র বলছেন, যারা এখনো কাজে যোগ দেননি তাদের মধ্যে আছেন অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) হারুন অর রশীদ,
অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম) মো. আসাদুজ্জামান, যুগ্মকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, যুগ্মকমিশনার (ডিবি) খন্দকার নুরন্নবী, সনজিত কুমার রায়, যুগ্মকমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) মেহেদি হাসান, যুগ্মকমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, যুগ্মকমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা, যুগ্মকমিশনার (লজিস্টিক) জায়েদুল আলম, যুগ্মকমিশনার (সাইবার সিকিউরিটি ও সাপোর্ট সেন্টার-উত্তর) আশরাফ হোসেন, যুগ্মকমিশনার (সাইবার সিকিউরিটি ও সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) মো. শহিদুল্লাহ, যুগ্মকমিশনার (ট্রান্সপোর্ট) এ বি এম মাসুদ হোসেন, উপকমিশনার (উত্তরা) কাজী আশরাফুল আজীম এবং পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার সাহা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএমপি সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ, প্রশাসন বিভাগসহ দু-একটি ইউনিটের সদস্যরা পুরোদমে অফিস করছেন। বাকিদের কক্ষে তালা ঝুলতে দেখা যায়। অনেকের ফোনও বন্ধ। তবে থানাগুলোয় ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন।