সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে এখনই ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হচ্ছে না। যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন
সোমবার (১৯ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পরিষদেও প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই সরকার রুটিন সরকার নয়। এটা একটা বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার পাশাপাশি সম্মিলিতভাবে দেশের প্রতিটি জায়গার মানুষের আন্দোলনের ফলে এই সরকার এসেছে। আমরা তাদেরই প্রতিনিধি। ছাত্র-জনতা, সেনার যে দাবি দাওয়া কার্যকরের জন্য আমাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছে সেটার আমরা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অপসারণের কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে এখন হাত দিচ্ছি না। যাচাই-বাছাই করে দেখা যাক সেখানে কার্যক্রম কী রকম আছে, যদি পরবর্তীকালে প্রয়োজন হয় বা প্রয়োজনের তাগিদে কোনো পদক্ষেপ নিতে হয়, সেটি নেয়া হবে। আর দৈনন্দিন যে কাজগুলো নিয়ে প্রত্যেকের আগ্রহের জায়গা ছিল যেমন জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ অন্যান্য যে কাজগুলো দৈনন্দিন করতে হয়, সেগুলো যাতে চালু থাকে; গ্রামীণ পর্যায়ের উন্নয়ন কার্যক্রম যেন চলমান থাকে, সেজন্য প্রথম দিকেই স্থানীয় যারা সরকারি কর্মচারী আছেন তাদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।
এর আগে দুপুরে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচিত দেশের ৩২৩ পৌরসভার মেয়র, ৬০ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ৪৯৩টি উপজেলা চেয়ারম্যান অপসারণ করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে দেশের ৩২৩ পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ করা হয়। এছাড়া ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকেও অপসারণ করা হয়েছে। আবার ৪৯৩টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে।
১৬ আগস্ট সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে অত্যাবশ্যক বিবেচনা করলে সরকার জনস্বার্থে কোনো সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলরকে অপসারণ করতে পারবে। একইভাবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করতে পারবে। একই সঙ্গে এগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে সরকার।
এমন বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ ’, ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ ’, ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ ও ‘উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’–এর খসড়া অনুমোদন করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।