ভিডিও ছড়িয়ে দিলে মেয়ের পৃথিবী ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না

‘আমার মেয়ে অবিবাহিত। স্নাতকের শিক্ষার্থী। এখন যদি ওই অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়, তাহলে তার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’ কথা গুলো বলছিলেন পাবনা সাঁথিয়ার কাশিনাথপুর বাজারে অবস্থিত মা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক তরুণীর বাবা। হাসপাতালের ম্যানেজার ইসমাইল হাসান চিকিৎসা নিতে আসা ওই তরুণীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার বিকেলে কাশিনাথপুরের মা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটন ঘটে। ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগীর বাবা জানান, শুক্রবার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর বাজারের মা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার জন্য মেয়েকে নিয়ে আসি। এ সময় আমি ও আমার স্ত্রীও হাসপাতালে ছিলাম। ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং ইসিজি করার কথা বলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার করার সময় হাসপাতালের ম্যানেজার ইসমাইল হাসান মেয়েকে বলেন, আপনার কাপড়ে বোতাম আছে। এতে আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি করা যাবে না। অন্য কাপড় পড়ে আসুন। একপর্যায়ে মেয়েটি বাথরুমে কাপড় পরিবর্তন করতে যায়। সেই সময় গোপনে ইসমাইল বাথরুমের দরজার উপর দিয়ে কাপড় পরিবর্তনের ভিডিও ধারণ করে। বিষয়টি বুধতে পেরে মেয়ে চিৎকার করে। মেয়ে বিষয়টি আমাকে ও আমার স্ত্রীকে জানায়। পরে আমার হাসপাতালের মালিক রুবেল খানকে ঘটনাটি জানাই। এ সময় অন্য রোগীরা ইসমাইলকে আটক করে রাখে।

ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা আরও বলেন, হাসপাতাল মালিককে অনুরোধ করেছিলাম যে, ছেলেটি ধারণ করা ওই ভিডিও ডিলিট করে দেয়। কিন্তু হাসপাতাল মালিক সে কাজ না করে ম্যানেজার ইসমাইলকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন। এবং হাসপাতাল মালিক তার স্থানীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বাধ্য করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, মা জেনারেল হাসপাতালের মালিক কাশিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও বেড়া পৌর মেয়রের ছত্রছায়ায় নানা অপরাধ করেছেন। ওই হাসপাতালে প্রায়ই অসামাজিক কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে। ইসিজি করার সময় সুন্দরী মেয়েদের ছবি তুলে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে অসামাজিক কাজে বাধ্য করে হাসপাতাল মালিক।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ম্যানেজার ইসমাইল হাসান এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

হাসপাতালের মালিক জাহাঙ্গীর করিম খাঁন রুবেল বলেন, এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে, তবে আমার হাসপাতালে না। সেটা আমার পাশের ইবনে সিনা হাসপাতালে। সেটা আমার বাবার। আর ওই ম্যানেজারকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়েছে। সে পলাতক আছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুল বাতেন বলেন, এটা অন্যায়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে এখনও থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।