বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার ১৭ সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়ক একযোগে পদত্যাগ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়। কারণগুলো হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবির কতিপয় সমন্বয়কের বিতর্কিত কার্যক্রম ও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নিজ স্বার্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারি দলের মতো আচরণ ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের বিরুদ্ধে কাজ করা।
পদত্যাগ করা সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়করা হলেন আব্দুর রশিদ জিতু, রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, হাসিব জামান, জাহিদুল ইসলাম ইমন, জাহিদুল ইসলাম, ফাহমিদা ফাইজা, রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, মিশু খাতুন, রাফিদ হাসান রাজন, হাসানুর রহমান সুমন, আব্দুল হাই স্বপন, নাসিম আল তারিক, ঐন্দ্রিলা মজুমদার, জিয়া উদ্দিন আয়ান, তানজিম আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি ও সাইদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে ৯ দফার অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার, আহত-ক্ষতিগ্রস্তদের দেখভালের দাবিগুলোতে তারা নিশ্চুপ রয়েছে। প্ল্যাটফর্মটি বর্তমানে একটি সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের মতো ভূমিকা পালন করছে।
বাকি সমন্বয়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। সহযোদ্ধাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার গণধোলাই এবং পরবর্তীতে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেননি। তবে অভিযুক্ত সমন্বয়কদের নাম উল্লেখ করতে রাজী হননি তারা।
এদিকে পদত্যাগ করলেও সাধারণ ছাত্রদের যেকোনো বিপদে-আপদে, সমস্যা-সম্ভাবনায় পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন এ সমন্বয়করা।
এ সময় তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতির ছাত্র আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে আমরা সবসময় পাশে থাকব। যেকোনো নৈতিক অধিকার আদায়ে আমাদের চেষ্টা সবসময় চলমান থাকবে।’
নতুন কোনো প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে হাসিব জামান বলেন, ‘আমরা আপাতত নতুন কোনো প্ল্যাটফর্ম গঠন করছি না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে যেকোনো সময়েই আমরা নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠন করব।’
এর আগে গত ৪ জুলাই জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের ছাত্র আরিফ সোহেলকে আহ্বায়ক ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের ছাত্র মাহফুজ ইসলাম মেঘকে সদস্যসচিব করে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এর কিছু দিন পরেই ১৩ জুলাই আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়।