উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (কুইক রেন্টাল) আইন, ২০১০’ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।
গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আইনটি বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, এই অধ্যাদেশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪ নামে অভিহিত হবে এবং এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আইনটি বাতিল হলেও এর আওতায় সম্পাদিত চুক্তি বা চুক্তির অধীন গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বৈধভাবে সম্পাদিত বা গৃহীত হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, “উক্ত আইনের আওতায় সম্পাদিত চুক্তির অধীন চলমান কোনো কার্যক্রম এমনভাবে অব্যাহত থাকবে অথবা নিষ্পন্ন করতে হবে যেন উক্ত আইন রহিত হয় নাই; এবং সরকার জনস্বার্থে উক্ত আইনের অধীন গৃহীত কোনো কার্যক্রম পর্যালোচনা করার অধিকার সংরক্ষণ করবে ও উক্ত কার্যক্রমের বিষয়ে যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।”
২০০৯ সালে তীব্র বিদ্যুৎ সংকটের মধ্যে দায়িত্ব নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেয়। দরপত্র প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলোকে কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এ জন্য ২০১০ সালে একটি আইনও করা হয়, যে আইনের কারণে এই প্রকল্প অনুমোদনকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাওয়ার পথ রুদ্ধ ছিল। সেই সুযোগ বাতিলের ফলে এখন অনুমোদন পাওয়া যে কোনো প্রকল্পকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব।
১৫ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপক অগ্রগতি হলেও দরপত্রের বাইরে অনুমোদন দেওয়া নিয়ে নানা মহলের সমালোচনা ছিল। সমালোচকদের অভিমত হচ্ছে, এভাবে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার কারণে বিদ্যুতের দাম বেশি পড়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ নভেম্বর আদেশে বিদ্যুৎ, জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ এর দুটি ধারা (৬ এর ২ ও ৯) অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
এরপর ২০ নভেম্বর ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ জারির প্রস্তাব নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
সেদিন সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ওই অধ্যাদেশের খসড়া লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়।