বাংলা চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও খল অভিনেতা হিসেবেই সফলতা পান আহমেদ শরীফ। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি প্রতিষ্ঠার স্বপ্নও দেখেছিলেন তিনি। নিজের সেই স্বপ্ন বাস্তবেও রূপ দেন।
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি প্রতিষ্ঠার সময়ে প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আহমেদ শরীফ। এরপর আরও দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক এবং চার মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন গুণী এই অভিনেতা।
আহমেদ শরীফ বলেন, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির স্বপ্নদ্রষ্টা আমি। মনে হয়েছিলো, আমাদের (শিল্পীদের) কথা বলার জায়গা থাকা উচিত। আমাদের ভালো-মন্দ বলার জন্য একটি প্ল্যাটফর্মের দরকার ছিলো। সেজন্যই রাজ্জাক সাহেব, এটিএম শামসুজ্জামান, খলিল ভাইসহ অনেকের সঙ্গে আলাপ করে তাদের সহযোগিতায় এই সংগঠন (শিল্পী সমিতি) দাঁড় করিয়েছিলাম। আমরা দায়িত্বে থাকাকালে খুব ভালোভাবে কাজ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এত বছর সমিতি চালিয়েছি কখনও তো সমিতি নিয়ে সমালোচনা হয়নি। আমাদের ঘটনা আমাদের মধ্যে থাকতো, বাইরের মানুষকে জানতেই দিতাম না।’
সভাপতি থাকাকালীন সময়ের একটি ঘটনার উদাহরণ টেনে আহমেদ শরীফ জানান, ‘তখনকার দিনে সালমান শাহ’র মতো তুখোড় নায়ককে এক মাসের জন্য ব্যানড করে দিয়েছিলাম। কারণ সে সেটে সময়মতো আসত না, প্রডিউসারদের কষ্ট দিতো, শুটিংয়ে সমস্যা হতো, খরচ বেশি হতো। আবার ১৫ দিন পরে তাকে কাজ করার অনুমতিও দিয়েছি। সমিতিটা একদম গুছিয়ে চালাতাম।’
তিনি যোগ করেন, ‘সমিতি যেভাবে চলছিলো সেটার ব্যত্যয় ঘটলো এই সময় এসে। খুবই নিন্দিত হলাম আমরা। আমেরিকায় বসবাস করা বাঙালিদের সঙ্গে দেখা হলেই আমাকে জিজ্ঞেস করতো, শরীফ ভাই এসব কি হচ্ছে শিল্পী সমিতিতে? আমি কোনো কথা বলতে পারতাম না।’
শিল্পী সমিতির নেতাদের উদ্দেশে এই অভিনেতা বলেন, ‘আমার অনুরোধ থাকবে, সংগঠনটির সঙ্গে যারা জড়িত, যারা এখন চালাচ্ছেন- আপনারা এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে সমিতি লজ্জিত হয়। সমিতিকে আমাদের মাথার মণি করে রাখা উচিত।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরের ক্যারিয়ারে আট শতাধিক সিনেমায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন আহমেদ শরীফ। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার তালিকায় রয়েছে অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, দেনমোহর, তিন কন্যা,বন্দুক প্রভৃতি।